বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

Logo
Logo

পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়বসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরির অভিযোগে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার অগ্নিদগ্ধ বাড়ি পরিদর্শন করেন তিনি।

 

এ সময় রুহুল কবীর রিজভী বলেন, এ বছর মানুষ শান্তি ও স্বস্তির সঙ্গে পহেলা বৈশাখ পালন করতে পেরেছে। যেহেতু ফ্যাসিবাদ ছিল না তাই আন্দোলন-সংগ্রামের নানা প্রতীক তৈরি করে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে। এটাতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার মনে হয় স্বয়ং যিনি পালিয়ে আছেন (শেখ হাসিনা) তার নির্দেশেই এখানে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসররা এই কাজটি করেছে।

 

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা সমাজের নানা জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র প্রয়োজন তার অর্থ তাদের কাছে আছে। সেটাকে দমন করতে আপনারা কী করবেন সেটা জনগণের কাছে খোলাসা করুন, যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায় পালিয়ে গেছে। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা? প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের তো এটা জানার কথা। যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভেতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।

 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে, সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে সেই দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। কারণ প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারিও আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কী তালবাহানা করছে তা আমরা দেখছি। এই সরকার তো গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তার তো প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে যে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কী করে। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তার চিত্রকর্ম দিয়ে, শৈল্পিক চেতনা দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। মানবেন্দ্র ঘোষের মতো আরও কত লোক যে সামনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, যারা লড়াই করেছে, গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছে, এখনো যারা ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের টার্গেটে পরিণত হয়ে আছে। তারা একেক করে তাদের ওপর আক্রমণ করবে।

 

এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাইদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীবসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
 

টাঙ্গাইল দর্পণ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের মেদান ইম্বিতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। অভিযানে ৫০৬ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক ওয়াইবিএইচজে দাতো জাকারিয়া বিন শাবান রাতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই অভিযানে মোট ৮৯৫ জন ব্যক্তির ডকুমেন্টস পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৪৯ জন অভিবাসী নাগরিক এবং ১৪৬ জন স্থানীয় নাগরিক ছিল। যাচাই-বাছাই শেষে ৫০৬ জন অভিবাসী নাগরিককে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের সন্দেহে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সকলের বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।

 

অভিযান এবং পরিদর্শনের সময় কিছু বিদেশি নাগরিক ছিল যারা ঘর, টয়লেট, স্টোররুম এবং অন্যান্য স্থানে লুকিয়ে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেছিল। আটক অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলোর মধ্যে ছিল পরিচয়পত্র না থাকা, পাসের শর্ত লঙ্ঘন, অতিরিক্ত সময় ধরে থাকা, অচেনা কার্ডধারী এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘনকারী অন্যান্য অপরাধ।
 

বিএনপি নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বিএনপি ১৭ বছর ধরে অংশগ্রহণমুলক, নিরপেক্ষ ও ‍সুষ্ঠভাবে নির্বাচনের জন্য লড়াই করে আসছে। এখনও সেই লড়াই চলছে। কেননা বর্তমানে কোন নির্বাচিত সরকার নেই। আছে অনির্বাচিত অন্তবর্তিকালীন সরকার। নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত আমাদের এ লড়াই চলবে। 

 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত বিএনপির ৩১ দফা বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।


ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি কখনও কারচুপির নির্বাচন করে নাই, সমর্থন করে নাই। ভবিষতেও কারচুপির নির্বাচন সমর্থন করবে না। বরং মানুষের সমর্থ নিয়ে সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করবে। কেননা দেশে নুন্যতম সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি ২/৩ মেজোরিটি নিয়ে সরকার গঠন করবে। দেশ পরিচালনা করবে।

 

তিনি আরো বলেন, এই দেশে বিরোধীমত কে সবসময় দমন নিপীড়ন করেছে আওয়ামী লীগ। কথা বলতে দেয়নি। নিজের গ্রামে, বাড়িতে থাকতে দেয়নি। হামলা মামলা দিয়ে জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ এমন অবস্থা করেছিলো, যার কারনে তারেক জিয়া দেশে আসতে পারে নাই। শুধু তাই নয় ৭৬ বছর বয়সে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছিলো। ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের কারনে আওয়ামীলীগের পতন হয়েছে। বাংলাদেশ নামের সাথে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নাম ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। এজন্য জিয়া পরিবার দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই জিয়া পরিবার ভালো থাকলে দেশ ও দেশের মানুষ ভালো থাকে।

 

এনসিপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি দেশে নির্বাচনে জিততে পারে এমন সম্ভাবনাময় দলকে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করে থাকে। এটি যুগে যুগে হয়ে আসছে। কিন্তু এনসিপি কি রাষ্ট্র পরিচালনায় আছে কিংবা আগামীতেও এমন অবস্থায় আছে, তারপরও রাষ্ট্র পরিচালনায় না থাকা সত্বেও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কি ঈঙ্গিত করে। এজন্য আগামী দিনগুলো বিএনপির জন্য আরো কঠিন। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনের মাধ্যমে যেভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের পতন ঘটানো হয়েছে। একইভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচিত সরকার পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রাখতে হবে।

 

রংপুর বিভাগীয় বিএনপির ৩১-দফা”-কর্মশালার সমাপনিতে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় এবং বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
 

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের কিস্তি পাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যেই বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানেও ঋণের কিস্তির বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে বলে জানান তিনি। 


অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপনের পর জুনেই আইএমএফের বাজেট সহায়তার কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। এরপরও ঋণ না পেলে বাজেট সহায়তার জন্য মরিয়া হয়ে ছুটবে না বাংলাদেশ-বলেন এ উপদেষ্টা।


অর্থ উপদেষ্টা জানান, “এনবিআরকে দুই ভাগ করা হচ্ছে। এটাকে আইএমএফ ভালো সিদ্ধান্ত বলেছে। সংস্থাটি ভর্তুকি কমানোর কথা বললেও, সেটি হুট করে কমানো সম্ভব নয়। আইএমএফের টাকা না পেলে দেশ চলবে না, এমনটি নয়। তবে পেলে ভালো হয়।”


২০২৩ সালে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিতে সম্মত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। মোট ৬ কিস্তিতে ঋণ দেয়ার কথা সংস্থাটির। এরইমধ্যে ৩টি কিস্তি বাংলাদেশ হাতে পেলেও চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রায় দুই সপ্তাহের ঢাকা সফর শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সংস্থাটির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বেশ কিছু সন্তুষ্টির কথা জানালেও চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় করা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।


চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে জুন পর্যন্ত। তবে বাজেট সহায়তার এই অর্থ পেতে জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পরপরই সিদ্ধান্ত জানতে চাইবেন অর্থ উপদেষ্টা। এ জন্য আগামী ২১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনেও সংস্থাটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।


দশ দিনের এই সফরে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও বৈঠক করবে বলে সময় সংবাদকে জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বাজেট ঘোষণা করার আগেই অর্থ ছাড়ের প্রতিশ্রুতি চেয়েছি। আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ওয়াশিংটনে শুধু আইএমএফ নয়, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গেও আলোচনা হবে।


এরইমধ্যে রাজস্ব বোর্ড বিকেন্দ্রীকরণ, রিজার্ভের স্থিতিশীলতায় সন্তোষ জানিয়েছে আইএমএফ। রাজস্ব বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সমন্বয় করা হয়েছে জ্বালানির দাম। তবে খাদ্য, কৃষি খাতে দেয়া ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ।


ওয়াশিংটনে সম্মেলন শেষে ২৯ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। ২ জুন ঘোষণা করা হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।
 

আলোচিত খবর

পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়বসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরির অভিযোগে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার অগ্নিদগ্ধ বাড়ি পরিদর্শন করেন তিনি।

 

এ সময় রুহুল কবীর রিজভী বলেন, এ বছর মানুষ শান্তি ও স্বস্তির সঙ্গে পহেলা বৈশাখ পালন করতে পেরেছে। যেহেতু ফ্যাসিবাদ ছিল না তাই আন্দোলন-সংগ্রামের নানা প্রতীক তৈরি করে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে। এটাতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার মনে হয় স্বয়ং যিনি পালিয়ে আছেন (শেখ হাসিনা) তার নির্দেশেই এখানে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসররা এই কাজটি করেছে।

 

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা সমাজের নানা জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র প্রয়োজন তার অর্থ তাদের কাছে আছে। সেটাকে দমন করতে আপনারা কী করবেন সেটা জনগণের কাছে খোলাসা করুন, যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায় পালিয়ে গেছে। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা? প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের তো এটা জানার কথা। যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভেতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।

 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে, সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে সেই দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। কারণ প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারিও আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কী তালবাহানা করছে তা আমরা দেখছি। এই সরকার তো গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তার তো প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে যে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কী করে। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তার চিত্রকর্ম দিয়ে, শৈল্পিক চেতনা দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। মানবেন্দ্র ঘোষের মতো আরও কত লোক যে সামনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, যারা লড়াই করেছে, গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছে, এখনো যারা ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের টার্গেটে পরিণত হয়ে আছে। তারা একেক করে তাদের ওপর আক্রমণ করবে।

 

এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাইদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীবসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
 

টাঙ্গাইল দর্পণ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের মেদান ইম্বিতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। অভিযানে ৫০৬ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক ওয়াইবিএইচজে দাতো জাকারিয়া বিন শাবান রাতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই অভিযানে মোট ৮৯৫ জন ব্যক্তির ডকুমেন্টস পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৪৯ জন অভিবাসী নাগরিক এবং ১৪৬ জন স্থানীয় নাগরিক ছিল। যাচাই-বাছাই শেষে ৫০৬ জন অভিবাসী নাগরিককে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের সন্দেহে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সকলের বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।

 

অভিযান এবং পরিদর্শনের সময় কিছু বিদেশি নাগরিক ছিল যারা ঘর, টয়লেট, স্টোররুম এবং অন্যান্য স্থানে লুকিয়ে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেছিল। আটক অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলোর মধ্যে ছিল পরিচয়পত্র না থাকা, পাসের শর্ত লঙ্ঘন, অতিরিক্ত সময় ধরে থাকা, অচেনা কার্ডধারী এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘনকারী অন্যান্য অপরাধ।
 

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
ভারতে সদ্য পাস হওয়া ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫ নিয়ে বিতর্ক ও আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে সুপ্রিম কোর্ট সাত দিনের জন্য আইনের কয়েকটি ধারায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াকফ বোর্ড ও কাউন্সিলে নতুন কোনো নিয়োগ দেওয়া যাবে না। 

 

এই আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ। 


বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) মামলার শুনানিতে আদালত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার আশ্বাস গ্রহণ করে জানান, সরকার আপাতত ওয়াকফ সংশোধনী আইন অনুযায়ী কোনো নিয়োগ দেবে না এবং বিদ্যমান নিবন্ধিত ওয়াকফ সম্পত্তির চরিত্রও পরিবর্তন করবে না।


উল্লেখ্য, ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫ চলতি এপ্রিল মাসের শুরুতে ভারতের দুই কক্ষ—লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয়। লোকসভায় বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি এবং বিপক্ষে ২৩২টি। রাজ্যসভায় পক্ষে ভোট পড়ে ১২৮টি ও বিপক্ষে ৯৫টি। ৫ এপ্রিল ভারতের রাষ্ট্রপতির সম্মতির মাধ্যমে বিলটি আইনে পরিণত হয়।


তবে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অনেক মুসলিম সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতা এটিকে ধর্মীয় সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে একধরনের হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেন। ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে ৭২টি আবেদন, যার মধ্যে রয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড, জমিয়াত উলামায়ে হিন্দ, ডিএমকে ও কংগ্রেসের কয়েকজন আইনপ্রণেতার নাম।


বিচারপতিদের বেঞ্চ জানায়, এত বিপুল সংখ্যক আবেদন একসঙ্গে শুনানির বাস্তবতা নেই। তাই আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে মাত্র পাঁচটি আবেদন বাছাই করে প্রাথমিক শুনানি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রকে এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। এরপর পিটিশনাররা পাঁচ দিনের মধ্যে নিজের অবস্থান জানিয়ে জবাব দেবে।


আদালত আরও বলেছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবহারকারীরা যেন কোনো হেনস্তার শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে কোনো ওয়াকফ সম্পত্তিকে ‘ডিনোটিফাই’ করা যাবে না বা তার ব্যবহার ও চরিত্র বদলানো যাবে না।


এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৫ মে, দুপুর ২টা। ঐ দিন আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে।
 

টাঙ্গাইল দর্পণ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশিদের জন্য নতুন একটি নির্দেশনা জারি করেছে, যা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি সময় অবস্থান করা বিদেশিদের বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। এ নির্দেশনা অমান্য করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা বা কারাদণ্ড সহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ তাদের অফিসিয়াল এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি পোস্টে এই নির্দেশনার বিষয়টি জানায়। পোস্টে বলা হয়, যেসব বিদেশি ৩০ দিনের বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিবন্ধন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া একেবারে বাধ্যতামূলক, এবং এর ব্যত্যয়ে গুরুতর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


নির্দেশনাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি কেউ এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া উপেক্ষা করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ৯৯৮ ডলার দৈনিক জরিমানা ধার্য করা হবে, যা এক পর্যায়ে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এছাড়া, অভিযুক্তদের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে এবং তাদের আর কখনও বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ থাকবে না।


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমের মন্তব্য উদ্ধৃত করে ওই পোস্টে বলা হয়, "অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আমাদের বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট—যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ুন এবং স্বেচ্ছায় নিজের দেশে ফিরে যান।" এছাড়া, যারা স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে চান, তাদের জন্য ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হবে, এমনকি আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে। পোস্টে বলা হয়, যারা নিজের উদ্যোগে দেশে ফিরতে চান, তারা যুক্তরাষ্ট্রে উপার্জিত অর্থও নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন।


তবে, যদি কেউ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান অব্যাহত রাখেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিকভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হবে, এবং সেই সঙ্গে প্রয়োজনে জরিমানা এবং কারাদণ্ডের শিকার হতে হবে।


নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যারা ফেরত যেতে চাইছেন কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম নয়, তাদের জন্য সরকার সহায়তার ব্যবস্থা করবে এবং বিমান ভাড়ায় ভর্তুকি দেওয়া হবে। তবে, যেসব বিদেশি এই নিয়ম অমান্য করে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে যাবেন, তাদের জন্য শাস্তির প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।


এই নতুন নিয়মটি সরাসরি বিভিন্ন ভিসার প্রক্রিয়া যেমন H-1B বা স্টুডেন্ট ভিসার ওপর প্রভাব ফেলবে না, তবে যারা অবৈধভাবে অবস্থান করবেন, তাদের জন্য এটি একটি বড় হুঁশিয়ারি হতে পারে। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুরক্ষা এবং অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।


সার্বিকভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের এই নতুন নিয়ম দেশটির অভিবাসন নীতির কঠোরতর দিকটি প্রতিফলিত করে। এই পদক্ষেপের ফলে, যেসব বিদেশি দীর্ঘ সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে, এবং এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও কঠোর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।


 

Site Counter

Online

9

Total

14k

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সরকারি নিয়ম বহির্ভুতভাবে পুকুর সংস্কার ও গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তার বক্তব্য ও তথ্য জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিককে ‘দালালের বাচ্চা সব’ বলে গালিগালাজ করেন।

 

শুধু তাই নয়, এর আগেও এসিল্যান্ড তারিকুল ইসলাম একাধিকবার সাংবাদিকদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। এমনকি কাউকে কাউকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

অভিযোগ উঠেছে, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা চাঁন মিয়াকে সভাপতি করে নিজেই পুকুর সংস্কার ও গাছ কাটার এই কাজ বাস্তবায়ন করছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম। প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার টিআর প্রকল্পের মধ্যে দৈনিক হাজিরা শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।

 

জানা যায়, সম্প্রতি ভূঞাপুর ভূমি কার্যালয়ের সামনের পুকুর পাড়ে কয়েকটি অর্ধশত বয়সী গাছ কাটা হয়। একই সাথে সরকারি পুকুরের সংস্কার কাজ শুরু হলেও কোন দরপত্র বা ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়নি। এছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগের কাছে কোন লিখিত বা অনুমোদনও নেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এখন টেলিভিশন ও রাইজিংবিডির টাঙ্গাইল প্রতিনিধি তার বক্তব্য ও তথ্য চাইতে এসিল্যান্ড মো. তারিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। এসময় এসিল্যান্ড ফোন রিসিভ করে বলেন, “আপনার যা মনে হয় লিখেন, আর কোন নিউজ নাই আপনাদের, দালালের বাচ্চা সব” গালি দিয়েই ফোনের সংযোগ কেটে দেন। সরকারি কর্মচারীর এমন অশোভন কথপোকথনে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ। সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ভূঞাপুরে আসার আগে তিনি ৬ মাসে ৩বার বদলী হয়েছেন বিভিন্ন কারণে।

 

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বরে তিনি ভূঞাপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহের মাথায় এক বালুর ঘাটে অভিযান পরিচালনা করেন এসিল্যান্ড তারিকুল ইসলাম। অভিযোগ উঠে, ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে ১০ কোটি টাকার বালু ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮০ (ভ্যাট ব্যাতিত) টাকায় গোপন নিলামে বিক্রি করেন। ওই খবর প্রকাশের পর থেকেই সাংবাদিকদের প্রতি তার আচরণ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তার এমন অবৈধ নিলামের প্রক্রিয়ার তথ্য জানতে যায় স্থানীয় কালবেলার প্রতিনিধিসহ কয়েকজন। এসময় এসিল্যান্ড তাদেরকে গালিগালাজ করে তার কক্ষ থেকে বের করে দেয়। তিনি তার আগের কর্মস্থলেও এমন আচরণ করেছেন মানুষের সাথে। তার বিপক্ষে গেলেই মামলার ভয় দেখানো হতো এবং ফেসবুকে সেটা লিখে পোষ্টও দিতেন তিনি। 

 

সম্প্রতি ভূঞাপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. আব্দুস সোবাহান বাইরে ক্লিনিকে রোগী দেখছেন এমন দৃশ্যের ভিডিও করায় তিন জন সাংবাদিকের নামে থানায় অভিযোগ দেয় এসিল্যান্ড তারিকুল ইসলাম। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সেটা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক হাদী চকদার বলেন, দৈনিক কালবেলার ভূঞাপুর প্রতিনিধি মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন বালু নিলামের তথ্য জানতে তার কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্যভাষায় গালাগালিসহ দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পরে তার কক্ষ থেকে বের করে দেয়া হয়।

 

দৈনিক কালবেলার ভূঞাপুর প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, তার অবৈধ বালু নিলাম প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। মামলার ভয় দেখান। মিডিয়াকে গুনার টাইম নাই, সে  এমন মন্তব্য করেন।  এসিল্যান্ড বলেন, “মিডিয়াতে লিখে যা ছিঁড়তে পারেন করেন গা... যান।”
 

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
নাটকীয়তা, উত্তেজনা আর হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর অবশেষে ২০২৫ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। যদিও শেষ দুটি ম্যাচে হেরে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেনি নিগার সুলতানার দল, তবুও শেষ মুহূর্তের অঙ্কের খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে হাসি ফুটেছে টাইগ্রেসদের মুখে। 


পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে হারের পর বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ নারী দলের সামনে। নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হারের পর টাইগ্রেসদের ভাগ্য ঝুলে ছিল থাইল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচে।


সমীকরণ ছিল বেশ কঠিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে থাইল্যান্ডের দেওয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হতো মাত্র ১০ ওভার ১ বল বা সর্বোচ্চ ১১ ওভারের মধ্যে—তা-ও শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকতে হতো।


ওয়েস্ট ইন্ডিজ মরিয়া প্রচেষ্টা চালায়। ১০.৫ ওভারে ৬ উইকেটে জয় পেলেও সূক্ষ্ম ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে নেট রান রেটে। ০.৬২৬ নেট রান রেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের, সেখানে বাংলাদেশের ছিল ০.৬৩৯। আর এতেই একচুল ব্যবধানে বিশ্বকাপের ট্রেন ধরতে ব্যর্থ হয় ক্যারিবীয়রা, নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের টিকিট।


লাহোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। মাত্র ৬২ বল বাকি থাকতেই হারতে হয় ৭ উইকেটে। তবে তিনটি জয় (থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে) আগেই পুঁজি করে ৬ পয়েন্ট ঝুলিতে পুরেছিল টাইগ্রেসরা।


অন্যদিকে, সমান তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট অর্জন করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজও। তবে ব্যাটিংয়ে একের পর এক মারকুটে শট, হ্যালি ম্যাথিউসের ২৯ বলে ৭০ ও হেনরির ১৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংস—সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয় মাত্র একটি ধীরগতির ওভারের জন্য। প্রথম ওভারে মাত্র ৯ রান তুলেছিল ক্যারিবীয়রা—সেই ধীর শুরুই কাল হয়ে দাঁড়ায়।


ভারতে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে মোট ৮টি দল। স্বাগতিক ভারতসহ সরাসরি সুযোগ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফর্ম করে জায়গা করে নিয়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। বাদ পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো পরাশক্তি।


বাংলাদেশের এই বিশ্বকাপ যোগ্যতা শুধু পরিসংখ্যান বা ভাগ্যের খেলা নয়—এটি ধারাবাহিক পরিশ্রম, পরিকল্পনা এবং আত্মবিশ্বাসের ফসল। নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বে দলটি যেভাবে বাছাইপর্বে শুরু করেছিল, সেটিই শেষ পর্যন্ত রক্ষা করে দিল তাদের জায়গা।
 

নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত আমাদের এ লড়াই চলবে: ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা

বিএনপি নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বিএনপি ১৭ বছর ধরে অংশগ্রহণমুলক, নিরপেক্ষ ও ‍সুষ্ঠভাবে নির্বাচনের জন্য লড়াই করে আসছে। এখনও সেই লড়াই চলছে। কেননা বর্তমানে কোন নির্বাচিত সরকার নেই। আছে অনির্বাচিত অন্তবর্তিকালীন সরকার। নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত আমাদের এ লড়াই চলবে। 

 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত বিএনপির ৩১ দফা বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।


ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি কখনও কারচুপির নির্বাচন করে নাই, সমর্থন করে নাই। ভবিষতেও কারচুপির নির্বাচন সমর্থন করবে না। বরং মানুষের সমর্থ নিয়ে সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করবে। কেননা দেশে নুন্যতম সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি ২/৩ মেজোরিটি নিয়ে সরকার গঠন করবে। দেশ পরিচালনা করবে।

 

তিনি আরো বলেন, এই দেশে বিরোধীমত কে সবসময় দমন নিপীড়ন করেছে আওয়ামী লীগ। কথা বলতে দেয়নি। নিজের গ্রামে, বাড়িতে থাকতে দেয়নি। হামলা মামলা দিয়ে জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ এমন অবস্থা করেছিলো, যার কারনে তারেক জিয়া দেশে আসতে পারে নাই। শুধু তাই নয় ৭৬ বছর বয়সে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছিলো। ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের কারনে আওয়ামীলীগের পতন হয়েছে। বাংলাদেশ নামের সাথে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নাম ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। এজন্য জিয়া পরিবার দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই জিয়া পরিবার ভালো থাকলে দেশ ও দেশের মানুষ ভালো থাকে।

 

এনসিপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি দেশে নির্বাচনে জিততে পারে এমন সম্ভাবনাময় দলকে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করে থাকে। এটি যুগে যুগে হয়ে আসছে। কিন্তু এনসিপি কি রাষ্ট্র পরিচালনায় আছে কিংবা আগামীতেও এমন অবস্থায় আছে, তারপরও রাষ্ট্র পরিচালনায় না থাকা সত্বেও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কি ঈঙ্গিত করে। এজন্য আগামী দিনগুলো বিএনপির জন্য আরো কঠিন। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনের মাধ্যমে যেভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের পতন ঘটানো হয়েছে। একইভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচিত সরকার পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রাখতে হবে।

 

রংপুর বিভাগীয় বিএনপির ৩১-দফা”-কর্মশালার সমাপনিতে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় এবং বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
 

সংগ্রাম শেষ হয়নি, গণতন্ত্র এখনো দূরে: মির্জা ফখরুল

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ এক অস্থির পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “এই সময়টা আমাদের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশনের টক শো—সবখানে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।”


রোববার রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজনে প্রয়াত বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।


মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা এখনো নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো নির্বাচিত সরকার বা সংসদ পাইনি। গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সংগ্রাম শেষ হয়নি।” তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, সতর্কতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।


সংস্কার ও নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমানে ‘সংস্কার’ ও ‘নির্বাচন’ শব্দ দুটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। এসব ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলের উচিত হবে সংলাপের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো।”


বক্তব্যে শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশার কথাও তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, “কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না, শ্রমিকের সন্তান ভালো স্কুলে যেতে পারে না, গেলেও বই পায় না। অথচ টক শো, নাটক এমনকি সংবাদ মাধ্যমেও এদের কোনো উপস্থিতি নেই।”


তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যে অন্তর্বর্তী সরকারের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে কি শ্রমজীবী মানুষের জন্য কোনো সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে?”


প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা এই সময় একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা কখনোই গণতন্ত্র বা বাংলাদেশের পরিবর্তনের পক্ষে থাকতে পারে না। তারা বিভাজন সৃষ্টিকারী।”


আলোচনায় প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই সন্ধিক্ষণে নোমান ভাইয়ের অভাব আমরা সবচেয়ে বেশি অনুভব করছি। তিনি ছিলেন এমন একজন নেতা, যিনি প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও জনমত গঠন করে আন্দোলন গড়ে তুলতেন।”


তিনি আরও বলেন, “আজকে যখন পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখন জনগণকে সঠিক পথে নেওয়ার কাজটা সবচেয়ে জরুরি। এই কাজে নোমান ভাই পারদর্শী ছিলেন।”


নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান বলেন, “আমার বাবা রাজনীতি করতেন আদর্শ নিয়ে, বিনিময়ে কিছু চেয়ে নয়। তিনি বিশ্বাস করতেন—রাজনীতিতে দেওয়ার আছে, নেওয়ার নয়।”


জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, “এ আন্দোলনে শ্রমিকরা প্রাণ দিয়েছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমি আশা করি, শ্রমিক দলের নেতারা সেই আত্মত্যাগের একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন, যেন ইতিহাস তাদের স্মরণ রাখতে পারে।”


তিনি বলেন, “সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক নেতৃত্বও পরিবর্তন হয়, এটি হওয়া উচিত নয়। শ্রমিকদের কথা বলবে শ্রমিকরাই। এজন্য শ্রমিকদের নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।”


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অনেকেই।


নজরুল ইসলাম খান বলেন, “নোমান ভাই ছিলেন নেতাদের নেতা। তিনি তার রাজনীতির পুরো সময় শ্রমিকদের জন্য নিবেদিত ছিলেন। এমন রাজনীতিক আজকের দিনে খুবই বিরল।”
 

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময় বাড়াতে ইসিতে এনসিপির আবেদন

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলআইন ডেস্ক:

তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া একটি চিঠিতে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা কমপক্ষে ৯০ দিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসির ঘোষিত সময়সীমাকে অবাস্তব ও সময়ের প্রেক্ষাপটে অযৌক্তিক উল্লেখ করে তারা এই অনুরোধ জানিয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবের দপ্তরে গিয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন এবং সদস্য মনিরুজ্জামান লিখিতভাবে এই আবেদন জমা দেন। চিঠির শিরোনাম ছিল: "নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন"।

 

এনসিপি দাবি করেছে, ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও সংশ্লিষ্ট আইনগুলো একনায়কতান্ত্রিক সরকারের সময়ে তৈরি, যা বর্তমানে গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত করে রাখছে। দলটির ভাষ্য অনুযায়ী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলীয় কার্যালয় স্থাপন, নির্দিষ্টসংখ্যক সদস্য সংগ্রহ ও অন্যান্য জটিল শর্ত পূরণ করতে একটি নতুন দলের জন্য তিন মাসের অতিরিক্ত সময় একান্তই প্রয়োজন।


চিঠিতে আরও বলা হয়, বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই অতীতের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ভোটবিহীন নির্বাচন, জাল ভোট ও রাতের ভোটসহ নানা অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। এসবের মধ্য দিয়ে নির্বাচনব্যবস্থায় আস্থা হারিয়েছে জনগণ। ফলে, জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান পরিবর্তনের ধারার সূচনা ঘটে, যার ভিত্তিতে এনসিপি গঠিত হয়েছে। তাই নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের সুযোগ পেতে যথাযথ সময় পাওয়া তাদের সাংবিধানিক অধিকার।


গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন একটি প্রতিবেদনসহ সুপারিশমালা পেশ করলেও, তা এখনও বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। এনসিপি দাবি করে, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নতুন আইন প্রণয়ন বা বিদ্যমান আইনের সংস্কার ছাড়া নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালানো যুক্তিসঙ্গত নয়।


এ প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, "নতুন দলগুলোর জন্য বর্তমান নিবন্ধন বিধিমালা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কমিশন যে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ এবং তড়িঘড়ি করে জারি করা হয়েছে। আমরা সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি মৌলিক সংস্কারের দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি।"


ইসি গত ১০ মার্চ নিবন্ধন আবেদন আহ্বান করে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যার আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২০ এপ্রিল। এনসিপি বলছে, এই সময়সীমা অপ্রতুল এবং নির্বাচন ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সময় বাড়ানো জরুরি।
এদিকে, ইসি সূত্রে জানা গেছে, এনসিপির চিঠি গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি কমিশনের সভায় আলোচনা হবে। দলটির সঙ্গে কমিশনের বৈঠক রোববার (২১ এপ্রিল) নির্ধারিত রয়েছে।

 

নারীর অধিকার, ক্ষমতায়ন, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

-মোঃ মাহবুব আলম চৌধুরী জীবন, লেখক, সাংবাদিক, সংগঠক

আজ (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হবে দিবসটি। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারীদের প্রতি ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে আরও একবার মনে করিয়ে দেয় এই স্লোগান। 

 

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তথ্য অনুসারে, অগ্রগতির বর্তমান হারে, পূর্ণ লিঙ্গ সমতা অর্জনে সময় লাগবে ২১৫৮ সাল পর্যন্ত, যা এখন থেকে প্রায় পাঁচ প্রজন্ম। ত্বরান্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে লিঙ্গ সমতা অর্জনের জন্য দ্রুত এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে এ বছরের নারী দিবসে। এটি ব্যক্তিগত এবং পেশাদার উভয় ক্ষেত্রেই নারীরা যে বাধা এবং পক্ষপাতের মুখোমুখি হন, তা মোকাবিলায় বর্ধিত গতি এবং জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানায়।

 

এই দিনটির শুরু ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আট ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। আন্দোলন করার অপরাধে সেসময় গ্রেফতার হন বহু নারী। কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই। তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ‘নারীশ্রমিক ইউনিয়ন’। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারীশ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার অধিকার। ১৯১০ সালের এই দিনে ডেনমাকের্র কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই সারা বিশ্বে দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

 

জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে। এর দুই বছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যেই দিন জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দেবার দিন। এদিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে স্বরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করে, যাতে আগামী দিনগুলো নারীর জন্য আরও গৌরবময় হয়ে ওঠে।

 

নারী নির্যাতন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা এখনো নারীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গার্হস্থ্য সহিংসতা, যৌন হয়রানি, কর্মস্থলে বৈষম্য এবং মানব পাচারের মতো সমস্যা বিশ্বজুড়ে রয়েছে। অনেক দেশে আইনি ব্যবস্থা থাকলেও, কার্যকর বাস্তবায়ন না থাকার কারণে নারীরা ন্যায়বিচার পায় না। আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানো ও পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। নারীর স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি করতে হবে। অনেক দেশে নারীরা মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকেও বঞ্চিত হয়, যা মাতৃমৃত্যুর হার বাড়ায়। সুলভ ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলে নারীরা আরও সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে পারবে।

 

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অপরিহার্য। বহু সংস্কৃতিতে এখনো নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়। নারীরা যাতে সমান মর্যাদা পায় এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে শিক্ষা ও গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের অর্জন ও সক্ষমতাকে প্রচার করা হলে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। নারীর ক্ষমতায়ন শুধুমাত্র নারীদের জন্য নয়, বরং গোটা সমাজের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। যখন নারীরা সমান সুযোগ পায়, তখন পরিবার, সমাজ ও অর্থনীতি লাভবান হয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে লিঙ্গসমতা অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সরকার, বেসরকারি সংস্থা, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

 

আজকের বিশ্বে নারীদের অগ্রগতি স্পষ্ট, কিন্তু এখনো অনেক পথ বাকি। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, নারীদের সমানাধিকার, সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সামাজিক ন্যায্যতা—সব কিছুতেই নারীদের অবদান অপরিহার্য। সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত, প্রগতিশীল ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে পারব।

 

নারী দিবসে বিশ্বের সর্বস্তরের নারীদের অবদানকে কুর্নিশ জানাই। জল ছাড়া যেমন জীবন অচল, তেমনই নারী ছাড়া অচল একটা সভ্যতা ও সমাজ। তাই নারীদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ৮ মার্চ সারা বিশ্বে এই বিশেষ দিনটি উদযাপিত হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রিয় ও পরিচিত নারীদের উপহার দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জানাতে পারেন দিনটির শুভেচ্ছা। এতে চলার সূচনাও হবে ইতিবাচকভাবে। সভ্যতার মেরুদণ্ড হল নারী। তাদের অবমাননা হলে সমাজও ধসে যায়। নারীদের অবদানকে তাই নিরন্তর কুর্নিশ। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিশ্বের সর্বস্তরের নারীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন এবং শুভকামনা।

 

একটি শিশুকে জন্ম দেওয়া থেকে বড় করে তোলা পর্যন্ত নারীদের অবদান অসীম। এই অবদানের কথাই মনে করিয়ে দেয় নারী দিবসের মতো একটি বিশেষ দিন। যেখানে নারীর সম্মান রয়েছে, সেখানে সমাজসংস্কৃতির উত্থান হবেই। নারীকে যে দেশ, যে সমাজ সম্মান জানায়, সেই দেশ অনেক উন্নতি করে। নারীদের শ্রমই একটি সমাজকে গড়ে তোলে। রান্না করে খাওয়ানো থেকে বিকেলে পড়তে বসানো, মনের সব কথা খুলে বলা থেকে বিপদে পাশে পাওয়া। বারবার নারীরা পাশে এসে দাঁড়ায়, সঙ্গে থাকে। স্নেহ, মায়া, মমতা দিয়ে শিশুদের নয়, একটা সমাজও সভ্যতাকে বড় করে তুলছে নারীরা। তাই তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা অসীম। কখনও মায়ের রূপে, কখনও বোন হয়ে, কখনও বন্ধু বা কখনও প্রেয়সী হয়ে বারবার নারীরা জীবন সমৃদ্ধ করে তোলে। বাড়ি আর বাইরের জগতে দুই স্থানেই আজ সমান দক্ষতায় লড়াই করে চলেছে নারীরা। তাদের এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাই।

 

নারীদের স্নেহছায়া আর যত্ন একটি শিশুর বড় হওয়ার জন্য জরুরি। আর শিশুরাই দেশ ও সমাজের ভবিষ্যত। একটি সভ্যতার ভবিষ্যতনির্মাতাদের আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে সংগ্রামী নারীদের স্যালুট জানাই। নারীদের অনবরত ত্যাগ রয়েছে বলেই আজ সভ্যতা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছে। নারীদের এই অবদান কোনওমতেই ভুলে যাওয়ার নয়।

 

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীর সুখী সমৃদ্ধশালী ও সম্মানজনক জীবন কামনা করে তাদেরকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল থীম "অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন” এর সফলতা কামনা করছি।
 

নতুন কালেকশন নিয়ে কে ক্র্যাফট

বৈচিত্র্যময় পোশাকের বিশেষ আয়োজন নিয়ে এসেছে কে ক্র্যাফট। তাই সকাল, বিকেল এবং সন্ধ্যায় কাক্সিক্ষত বা উপযোগী পোশাক নির্বাচনে ক্যাজুয়াল কিংবা এক্সক্লুসিভ সবই মিলবে এবারের আয়োজন থেকে। এছাড়া লম্বা ছুটিতে যেখানেই যান তার জন্য প্রয়োজন স্টাইলিশ কিন্তু রিলাক্সড পোশাক। আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে মানানসই এমনি সব পোশাক থাকবে এবারের আয়োজনে। 

 
মেয়েদের জন্য সালোয়ার কামিজ এবং কুর্তিতে ফ্রক স্টাইল, এ লাইন এবং রেগুলার শেপ ছাড়াও স্ট্রেইট কাট, রাফল, প্লিটেড, বক্স প্লিটেড স্টাইল থাকবে। নিজস্ব ডিজাইনের শাড়িতে মোটিফের ব্যবহার, কালার কম্বিনেশন এবং ভ্যালু অ্যাডিশনে নানা মিডিয়ার ব্যবহার সকলের দৃষ্টি  কাড়বে। ছেলেদের জন্য রয়েছে পছন্দের ব্র্যান্ড কে ক্র্যাফটের রেগুলার ও ফিটেড পাঞ্জাবি। এছাড়াও পাওয়া যাবে স্মার্ট ক্যাজুয়াল শার্ট, এথনিক শার্ট, ফতুয়া। কে ক্র্যাফটের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লার সকল শো-রুম ছাড়াও অনলাইন শপ kaykraft.com থেকে ঈদ আয়োজন এর পোশাক পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী মূল্যে। এছাড়াও অর্ডার করা যাবে ফেসবুক পেজ থেকেও । 

আত্মরক্ষায় মেয়েদের উদ্যোগ

শারীরিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল নারীদের নিয়ে সামাজিকভাবে এক প্রকার অবহেলা, উদাসীনতা প্রত্যক্ষ করা যায়। নিজেদের সুরক্ষার বিষয়ে তো অনেকখানিই। আত্মরক্ষা করার সুষম সক্ষমতা মেয়েদের কিছুটা পিছিয়ে রাখে এটাই সমাজ সংস্কারের নিয়ম। সেই আদিকাল থেকে আজ অবধি। কিন্তু যুগের পরিবর্তন, নতুন সময়ের আবেদনে নারীদের সদর্পে এগিয়ে চলা বর্তমানে ধারাবাহিক কার্যক্রমের অনুষঙ্গ। এখনো শারীরিক শক্তিময়তায় নারী খেলোয়াড়দের অনেক বাধাবিঘœ অতিক্রম করা নজরে আসতে সময় লাগছে না।

সেটাও কম কিছু নয়। কঠিন কর্মযোগে সম্পৃক্ত হতে গেলে সবার আগে প্রয়োজন সুস্থ, সবল শারীরিক সক্ষমতা। ক্রমান্বয়ে তা পারদর্শিতায় রূপ নিতে দেরি হয় না। যা সমতাভিত্তিক সমাজ-বিনির্মাণের নির্ণায়ক। সম্প্রতি এক খবরে মেয়েদের আত্মরক্ষার প্রস্তুতির ওপর চমকপ্রদ ঘটনা নজরকাড়ার মতো, পরনির্ভরশীলতা, দুর্বলতা, আর কিছুটা অক্ষমতায় পিছিয়ে পড়া মেয়েরা নিজ উদ্যোগে তাদের সবল করার প্রত্যয়ে ব্রতি হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সেখানকার মেয়েরা আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের শারীরিক সক্ষমতাকে প্রমাণ করতে এগিয়ে এসেছে।

 

সত্যি এক অসাধারণ কর্ম সাধনা। ‘সবলা’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেনÑ নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকারÑ হে বিধাতা, সেটার জন্য অনেক অপেক্ষার পালা সীমা অতিক্রম করেছে। কিন্তু সেটাও যখন হাতের নাগালে তাই যেন সই। সংখ্যায় কম হলেও সামনে আরও বাড়বে। অসাম্য বৈষম্যের বন্ধনজালে আবদ্ধ নারীরা চিরায়ত অপসংস্কারেও আকণ্ঠ নিমজ্জিত। এক সময় খেলাধুলায় তাদের অংশীদারিত্বও ছিল নগণ্য। যুগের হাওয়ায় তা ধুলায় মিশিয়ে দিয়ে নিজেকে যে মাত্রায় প্রমাণ করে যাচ্ছে সেটা নারী জাতির অবিস্মরণীয় বিজয়।

 

কর্মজীবী নারীরা এখন ক্ষুদ্র পরিবার সামলিয়ে বৃহত্তর সামাজিক আঙিনায় পেশাগত কর্মযোগকেও অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে। ভীরু নারীরা আজ সময়ের দুরন্ত আহ্বানে দুঃসাহসিক হয়ে উঠতেও যেন মরিয়া। স্বাবলম্বী হওয়া থেকে আরম্ভ করে শারীরিক সক্ষমতাকে প্রমাণ করা সবই যেন অপার মহিমার সঙ্গে অসম পারদর্শিতাকেও দৃষ্টিনন্দন করে তুলছে। 
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নারীরা আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণের ওপর এক চমকপ্রদ ঘটনা সমসংখ্যককে নতুনভাবে উদ্ভাসিত করা। আপন দক্ষতা আর শক্তিময়তায় আনোয়ারা উপজেলায় বিভিন্ন ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশাপাশি ‘শাওলিন কুংফুং অ্যান্ড উন্ড একাডেমি’, ‘বাংলাদেশ টাইগার মার্শাল আর্ট’, ‘শাওলিন উন্ড ট্রেনিং সেন্টার’ নামে তিনটি নারী আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। কোনো কঠিন কাজের সামনে কাঁপন ওঠার মতো দুঃসময় নারীকে এখন আর সেভাবে তাড়া করে না।

তা ছাড়া জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শিশু সংস্থা ইউনিসেফের কার্যক্রমে শিশু-কিশোর সেলফ ডিফেন্স ক্লাব, মহিলা অধিদপ্তরের কিশোর-কিশোরী ক্লাবসহ আরও কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণকে জোরালো করা হচ্ছে। আনোয়ারার এমন চমৎকার পরিবেশে ছেলেমেয়ে উভয়ই পাশাপাশি অবস্থান করে প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়াও সমতাভিত্তিক সুস্থ পরিবেশকে স্বাগত জানানো। ছেলেময়ের সমান অংশগ্রহণে পোশাক-পরিচ্ছেদেও কোনো বিভেদ নেই। এক রকম পোশাক পরে মানুষের মর্যাদায় যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আধুনিক ও উদীয়মান প্রজন্ম তা আগামীর বাংলাদেশকে বৈষম্যহীনতার আদলে নতুন মোড়কে উন্মোচন তো করবেই।

এ ছাড়াও আছে এনজিও সংস্থার নানামাত্রিক প্রকল্প, যা ছেলেমেয়েকে সমান বিবেচনায় দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে নিয়ত সমতাভিত্তিক কর্মযোগ নিরন্তর করেই যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সেলফ ডিফেন্সের প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীরা পারদর্শী  আর শারীরিক সক্ষমতায় নিজেদের তৈরি করে যাচ্ছে। আধুনিক ও প্রযুক্তির নতুন বাংলাদেশের নব অধ্যায়ের শুভ সূচনা তো বটেই। তবে মেয়েদের শাশ্বত কর্মযোগকেও সমানভাবে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যেমন সেলাই, বিউটিশিয়ান হিসেবেও প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের স্বাবলম্বী করতেও মেয়েরা এগিয়ে থাকছে।

নারী প্রশিক্ষণ প্রার্থীদের আবেগ-উচ্ছ্বাসেরও কোনো ঘাটতি নেই। পরম আনন্দে, স্বইচ্ছায় উদ্যোগী হয়ে তারা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে নিজেদের যাত্রাকে সাবলীল আর অবারিত করে যাচ্ছে। তাদের আলাপচারিতায় আরও প্রত্যক্ষ হয় ঘর থেকে বাইরে যেতে গেলে পিতা-মাতা-অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। নির্বিঘেœ, নিরাপদে যাওয়া-আসা করা যাবে তো? পথে-প্রান্তরে কোনো বিপত্তির আশঙ্কা নেই তো? তাই নিজের নিরাপত্তায় শারীরিকভাবে সক্ষম হওয়াও জরুরি। সঙ্গত কারণে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণও সময়ের ন্যায্যতা দাবি করে। তার ওপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার পথে বখাটে ছেলেদের উৎপীড়ন, উৎপাত বহু সময় ধরে ঘটে যাওয়া এক দুঃসহ ঘটনার পালাক্রম।

সেখানে নিজেদের সুরক্ষায় প্রতিপক্ষকে থামাতে আত্মশক্তির বিকল্প অন্য কিছু নয়। এটা শুধু চট্টগ্রামের আনোয়ারাতে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। বরং বাংলাদেশের শহর-গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্তরে এমন কার্যক্রম সম্প্রসারিত করতে হবে। যাতে সারাদেশের মেয়েদের রাস্তাঘাটে কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যেতে-আসতে কোনো বাধাবিপত্তির মুখোমুখি হলে প্রতিরোধ করার শক্তিও যেন অন্তর্নিহিত বোধে জিইয়ে থাকে।

 
 

চায়ের সাথে ভুলেও যে ৪ খাবার খাবেন না

চা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। এর প্রশান্তিদায়ক উষ্ণতা এবং অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে শুধু চা হলে জমে না অনেকের, এর সঙ্গে প্রয়োজন হয় অল্পস্বল্প কিছু খাবার। এরকম খাওয়া যেতেই পারে। তাতে ক্ষতির কিছু নেই। 

দুগ্ধজাত পণ্য

 

আমাদের দেশে জনপ্রিয় সব পানীয়ের মধ্যে অন্যতম হলো দুধ চা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চায়ের সঙ্গে দুগ্ধজাত কোনো খাবারই না খেতে। দুগ্ধজাত প্রোটিন চায়ের সূক্ষ্ম গন্ধকে পরিবর্তন করে এবং একে কম উপভোগ্য করে তোলে। যদিও আপনার চায়ে কিছুটা দুধ মেশানো গ্রহণযোগ্য হতে পারে, তবে চায়ের সঙ্গে পনির, দই বা ক্রিম খাওয়া এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।

 

সাইট্রাস ফল

কমলা, লেবু এবং আঙ্গুরের মতো সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এগুলো চায়ের ট্যানিনের সঙ্গে সংঘর্ষ করতে পারে, যার ফলে একটি তিক্ত বা ধাতব স্বাদ তৈরি হয়। সাইট্রাস ফলের অম্লতা চায়ের সঙ্গে মিলিত হলে পেট খারাপ হতে পারে, যা হজমের অস্বস্তি তৈরি করে। অনেকে চায়ের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে খান, সামান্য লেবুর রসে সমস্যা নেই তবে আস্ত সাইট্রাস ফল চায়ের সঙ্গে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

 

ঝাল খাবার

চায়ের সঙ্গে পাকোড়া, পুড়ি, সিঙ্গারা ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের খাবার চায়ের সূক্ষ্ম স্বাদকে নষ্ট করতে পারে। সেইসঙ্গে ঝাল জাতীয় খাবারে থাকা ক্যাপসাইসিন এবং চায়ে থাকা ট্যানিনের সংমিশ্রণ গ্যাস্ট্রিক জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। তাই চায়ের সঙ্গে যেকোনো ঝাল জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার

উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন কাঁচা শাক-সবজি, গোটা শস্য এবং লেবু স্বাস্থ্যকর খাদ্যের জন্য অপরিহার্য। তবে এগুলো চায়ের সঙ্গে খাওয়া হলে তা আয়রনের মতো নির্দিষ্ট খনিজ শোষণে বাধা দিতে পারে। চায়ে অক্সালেট নামক যৌগ রয়েছে, যা খনিজের সঙ্গে আবদ্ধ হয় এবং তার শোষণকে বাধা দেয়। তাই চায়ের সঙ্গে উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

সম্পাদক : আবু তাহের

© ২০১৪-২০২৫ টাঙ্গাইল দর্পণ, অনলাইন নিউজ পেপার ২৪/৭