আহত সিয়ামের দরকার উন্নত চিকিৎসা, কিন্তু কে করবে এই ব্যবস্থা?
প্রতিবেদন: মোঃ মামুন ইসলাম, রংপুর, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর মতো সিয়ামও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলেন সক্রিয়। তিনি শহিদ আবু সাঈদের সাথে জুলাইয়ের শুরু থেকেই সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
গত ১৬ জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের শাহাদতবরণের সময়ও সিয়াম তার পাশে ছিলেন। এ সময় আরো কয়েকজন সহযোদ্ধা শিক্ষার্থীর সাথে সিয়াম গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন।
সিয়ামের মাথার ভেতরে ছয়টিসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কমপক্ষে ৬০ টি ছররা গুলি বিদ্ধ হয়।
চরম অর্থ সংকটের কারণে দেশে বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে না পারায় সিয়াম এখন সার্বক্ষণিক অসহনীয় মাথা ব্যাথাসহ নানারকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তার পড়ালেখাসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে দিন দিন এগিয়ে চলেছেন সিয়াম।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে তাওহীদুল হক সিয়াম (২৩) ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিন বছর ধরে টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা ও থাকা-খাওয়ার খরচ চালিয়ে আসছিলেন। অভাব অনটন থাকলেও কোন অভিযোগ ছিল না সিয়ামের।
নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া গ্রামে সিয়ামের জন্ম। তার প্রবাসী বাবা মো: শহিদুল হক (৫০) কয়েকবছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাইয়ে শ্রমিকের কাজ করছেন। চার পুত্র সন্তানের জননী সিয়ামের মা দিল আরা বেগম (৪২) একজন গৃহিণী। সিয়াম সবার বড়। তার মেজ ভাই মো: সাবরি (২১) নোয়াখালীর স্থানীয় একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। আরেক ভাই মো: সাইমুন (১৭) আলিম প্রথম বর্ষ এবং কনিষ্ঠ ভাই আব্দুর রহমান সালেম (১২) ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
কেবলমাত্র প্রবাসী পিতার সামান্য আয় দিয়ে কোনরকম টেনেটুনে চলে সিয়ামদের পরিবার।
সম্প্রতি বাসসের এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে সিয়াম ২৪ এর জুলাইয়ের সেই উত্তাল দিনগুলিতে তার, শহিদ আবু সাঈদ এবং অন্যান্য সহপাঠীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বর্ণনা করেন।
সিয়াম বলেন, জুলাইয়ের প্রথম থেকে শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় হয়। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শুরু করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছাত্র ছিলেন আবু সাঈদ, সোহান, শামসুর রহমান সুমন, নাহিদ হাসান শাকিল, রহমত আলী, সাবিনা ইয়াসমিনসহ অনেকে।
বর্তমানে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ও বাধা দিয়েছিলেন।
সিয়াম বলেন, ‘যখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা দেশব্যাপী ’বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করে, তখন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির সমর্থনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেয়।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া তার সহযোগীদের সাথে ’বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে।
গত ১১ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করা কালে তারা বাধাপ্রাপ্ত হলে আন্দোলনটি এক ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।
সিয়াম বলেন, ‘মিছিলটি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন গেট নং ১ বা বর্তমানের শহিদ আবু সাঈদ গেটে পৌঁছায়, তখন তৎকালীন প্রক্টর এবং প্রক্টোরাল বডির সদস্য শিক্ষকরা প্রথমে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়।
কিন্তু শিক্ষকদের বাধা উপেক্ষা করেই শিক্ষার্থীরা মিছিল করতে থাকলে একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণ করে এবং আবু সাঈদের গায়ে হাত তোলে।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৪ জুলাই রাত ১টার দিকে, যখন ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রদের রাজাকার বলে সম্বোধন করেন, তখন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কথার তীব্র প্রতিবাদ করেন। ক্যাম্পাসের হল ও আশেপাশের মেসের শিক্ষার্থীরা তাদেরকে রাজাকার বলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন।
সেদিন আবু সাঈদ, সুমন, সোহাগ এবং আহসান হাবিবসহ অন্যান্যরা তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে ও আশেপাশের এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। তখন ছাত্রলীগের সশস্ত্র নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের দিকে উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে ইট ও পাথর ছুঁড়ে অনেক ছাত্রকে আহত করে।
পরের দিন, ১৫ জুলাই, যখন সাধারণ ছাত্ররা একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিল, তখন সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্রলীগ পাল্টা কর্মসূচি পালন করে।
সিয়াম বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করার জন্য, পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ, মহানগর ছাত্রলীগ এবং অস্ত্রধারী বহিরাগতরাসহ অনেক সন্ত্রাসী সাধারণ ছাত্র এবং ছাত্রদের মেসে আক্রমণ করে।
এরপর ১৬ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুর মহানগরীর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্কুল ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেদিন বিশাল প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
এ সময় নগরীর লালবাগ এলাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল এগিয়ে এলে শত শত সশস্ত্র পুলিশ রাজপথে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
পুলিশ শিক্ষার্থীদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পর্যায়ে পাঁচজন পুলিশ স্টিল ও কাঠের লাঠি দিয়ে আবু সাঈদের মাথায় আঘাত করতে শুরু করে।
এ পরিস্থিতিতে সিয়াম আবু সাঈদকে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। পুলিশ আবু সাঈদকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ যখন আবু সাঈদকে লাঠি দিয়ে আঘাত করছিল, তখন অন্য একজন পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে তাকে ও আমাকে রিভলবার দিয়ে গুলি করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি যখন তাদের দিকে ক্যামেরা তাক করি, তখন অন্য একজন পুলিশ সেই পুলিশ সদস্যকে আমাদের দিকে গুলি করতে বাধা দেয়।
সিয়াম বলেন, ‘এক পর্যায়ে আহত আবু সাঈদ আমার ক্যামেরার সামনে বলেন, ‘আমি আবু সাঈদ, ইংরেজি বিভাগের ছাত্র,’ এবং পুলিশকে চিৎকার করে বলেন, ‘শ্যুট মি...শ্যুট মি...।
এ সময়ে পুলিশ গেটের ভেতর থেকে গুলি, কাঁদানে গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট দখলে নেয়।
তিনি বলেন, ‘সব ছাত্র সরে যায়, কিন্তু আবু সাঈদ এবং আমি নড়ি না।
পুলিশের হামলার এক পর্যায়ে, আবু সাঈদ বুক প্রসারিত করে তাদের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন ১ নম্বর গেট থেকে একজন পুলিশ প্রথমে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। প্রথম গুলিটি যখন আবু সাঈদের পেটে লাগে, তখন তিনি হতবাক হয়ে যান এবং হয়তো কিছু বুঝতে না পেরে আবার বুক প্রসারিত করে সেখানে দাঁড়িয়ে যান।
সিয়াম বলেন, ‘আমি যখন আবু সাঈদকে গুলি থেকে রক্ষা করতে যাচ্ছিলাম, তখন পুলিশ তাকে আবার পরপর দুই রাউন্ড গুলি করে, যার ফলে সে ঢলে মাটিতে পড়ে যায়। তারপর, আমি তার কাছে পৌঁছাই এবং আমাকে দেখার পর, আরও কিছু ছাত্র তাকে মাটি থেকে তোলার জন্য ধরে এবং তখন তিনি আবার পড়ে যান। তখন সকলে মিলে আবারো তাকে তুলে ধরি।
তিনি বলেন, ‘চার/পাঁচজন মিলে আমরা আবু সাঈদকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে আবার গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে আমার শরীরের বাম দিকটি ঝাঁঝরা ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। প্রায় ৬০টি ছররা গুলি আমার মাথা, মুখ, হাত, বাহু, পেট, কোমর এবং পায়ের বাম দিকে বিদ্ধ হয়।
সিয়াম আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের আন্দোলনরত ছাত্র আহমেদুল হক আলভী, আরেকজন সহযোদ্ধা ছাত্রের সাথে আমাকে রিকশায় করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘সেখানে পৌঁছানোর পর আমি অনেক আহত সহযোদ্ধা ছাত্রদেরকে দেখতে পাই। তাদের অনেকের আঘাতই ছিল গুরুতর।
এত আহত ছাত্র দেখে, সিয়াম নিজের চিকিৎসা না করেই ফেসবুক লাইভে এসে হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা পরিস্থিতি প্রচার করতে থাকেন। এ সময় তিনি নিজেও রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন। তবুও তিনি আহত ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য ডাক্তার ও নার্সদের ডাকেন।
অনেক পুলিশ তখন হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করা আহত ছাত্রদের সন্ত্রাসী ট্যাগ দিয়ে গ্রেপ্তার করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
সিয়াম বলেন, ‘এ ছাড়াও, আমি আবু সাঈদের কথা ভাবতে থাকি, কারণ তার অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। ফেসবুকে লাইভ করার সময় আমি আবু সাঈদের খোঁজ নিতে যাই। আমি দেখতে পাই যে তাকে দ্বিতীয় তলায় রাখা হয়েছে। সেখানে আমি বিকেল ৩:৪৫ মিনিটে গিয়ে আবু সাঈদকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।
তিনি বলেন, ‘একইসাথে আন্দোলনরত অবস্থায় আমার সামনে একজন আইকনিক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখে এবং অল্প সময়ের ব্যবধানে তার মৃতদেহ দেখে আমি নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি।এদিকে, আমার শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে শুকিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর সিয়াম হাসপাতালে আর নিরাপদ বোধ করেননি। তিনি ভয় পান এই ভেবে যে পুলিশ যে কোনো মুহূর্তে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এই ভয়ে আমি ডাক্তারদের না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাই। তারপর আমি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমার মেসে যাই। শরীরে থাকা অসংখ্য ছররা গুলির ব্যথা সহ্য করতে না পেরে কদিন পরে রংপুরের বেসরকারি আল মদিনা হাসপাতালে যাই। সেখানে আমার শরীরে প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিয়ামের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে তার চিকিৎসা করে।
আবার কয়েকদিন পরে সিয়াম চরম গোপনীয়তা বজায় রেখে রংপুরের বেসরকারি মেডিল্যান্ড হাসপাতালে তার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করেন।
তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে দুটি অস্ত্রোপচার করার পরেও আমার মাথার সংবেদনশীল স্থানগুলোতে এখনও পাঁচটি ছররা রয়েছে। ফলে, আমি মাথায় সার্বক্ষণিক তীব্র ব্যথা অনুভব করি। আমার মুখ, হাত, কোমর এবং পায়ের বিভিন্ন জায়গায় অনেক গুলির স্পিøন্টার রয়েছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হওয়ার পর সিয়াম তার মেসে থাকা-খাওয়াসহ শিক্ষার অর্থায়নের অন্যতম উৎস টিউশনি হারিয়ে ফেলেন।
সিয়াম বলেন, ‘আন্দোলনের তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমি ফেসবুকে লাইভ প্রোগ্রাম করতাম। শুরু থেকেই এ কাজ করতে গিয়ে আমি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। আমার ফোনের ক্যামেরা ভেঙে গেছে। এদিকে চিকিৎসার জন্য ধার করেছি। এখন আমি ঋণগ্রস্ত। দারিদ্র্যের সাথে মাথায় ছররার কারণে তীব্র যন্ত্রণা আমাকে আরও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে।
তিনি বলেন, ‘এখন আমি আর মানসিক চাপ নিতে পারছি না। অসুস্থতা এবং মাথাব্যথা আমার নিত্যদিনের সঙ্গী। আমার একাডেমিক পড়াশোনার জন্য একটি ল্যাপটপ কিনতে হতো। এজন্য আমি বছরের পর বছর ধরে টাকা সঞ্চয় করে আসছিলাম। কিন্তু, চিকিৎসা খরচ মেটাতে আমি সেই টাকাও খরচ করেছি। ভবিষ্যতে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে, তা জানি না।
সিয়ামের গত ৫ আগস্ট শেষ অস্ত্রোপচার করেছিলেন রংপুরের মেডিল্যান্ড হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ মোঃ আমিনুর রহমান। এ সময় এই চিকিৎসক তাকে বলেছিলেন যে তার মাথার যে জায়গাগুলিতে ছররা রয়েছে, সেগুলি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
সিয়াম বলেন, ‘ডাক্তার আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন যে যদি শারীরিক সমস্যা না হয়, তবে ছররাগুলি আমার শরীরে বহন করতে হবে। যদি অন্য কোনও উন্নত চিকিৎসার নেয়ার সুযোগ থাকে, তবে তিনি আমাকে অবিলম্বে তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
মাথায় ছররা গুলির কারণে সিয়াম পড়াশোনা করতে পারছেন না। পারছেন না কোনকিছুতে মনোযোগও দিতে। তিনি মাথার অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চান উন্নত চিকিৎসা। অথচ সিয়াম চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন।
জুলাই বিপ্লবের অন্যতম এক নায়ক সিয়াম। তার জন্যে কে করবে এই ব্যবস্থা? -বাসস
পরের দিন, ১৫ জুলাই, যখন সাধারণ ছাত্ররা একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিল, তখন সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্রলীগ পাল্টা কর্মসূচি পালন করে।
প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর সিয়াম হাসপাতালে আর নিরাপদ বোধ করেননি। তিনি ভয় পান এই ভেবে যে পুলিশ যে কোনো মুহূর্তে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করতে পারে।
সিয়াম বলেন, ‘ডাক্তার আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন যে যদি শারীরিক সমস্যা না হয়, তবে ছররাগুলি আমার শরীরে বহন করতে হবে। যদি অন্য কোনও উন্নত চিকিৎসার নেয়ার সুযোগ থাকে, তবে তিনি আমাকে অবিলম্বে তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
জাতীয়
সীমান্তে উত্তেজনা: জিরো পয়েন্ট এড়িয়ে চলার আহ্বান বিজিবির
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
পাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকদের মাঝে উত্তেজনার পর জিরো পয়েন্টে না যেতে দেশের নাগরিকদের প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ—বিজিবির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক ও বিএসএফ সদস্য। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয়রা। ফলে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এ সময় দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ সদস্যরা হঠাৎ করেই কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় একাধিক ককটেলও ফাটান তারা। পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন বিএসএফ সদস্যরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশের ভেতরে লাগানো বেশ কিছু আম গাছ কেটে নষ্ট করা হয়েছে।
এ খবরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন বিজিবি সদস্যরা। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠক শেষে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, বাংলাদেশিদের আম গাছ কাটা নিয়ে সীমান্তের দুই পাশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তবে এই সময়ে বাংলাদেশি সাধারণ নাগরিকদের সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে না যেতে আহ্বান জানান তিনি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিএসএফ সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, যাতে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হয়েছে। এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি বিজিবির উচ্চপর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিকরা যে আম গাছ কেটে ফেলেছে, এজন্য বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে তারা ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।’
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি চৌকা সীমান্তে আইন অমান্য করে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এতে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এর দশ দিন যেতে না যেতেই সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। -ইউএনবি
পাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকদের মাঝে উত্তেজনার পর জিরো পয়েন্টে না যেতে দেশের নাগরিকদের প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ—বিজিবির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক ও বিএসএফ সদস্য। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয়রা। ফলে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এ সময় দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ সদস্যরা হঠাৎ করেই কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় একাধিক ককটেলও ফাটান তারা। পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন বিএসএফ সদস্যরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশের ভেতরে লাগানো বেশ কিছু আম গাছ কেটে নষ্ট করা হয়েছে।
এ খবরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন বিজিবি সদস্যরা। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠক শেষে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, বাংলাদেশিদের আম গাছ কাটা নিয়ে সীমান্তের দুই পাশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তবে এই সময়ে বাংলাদেশি সাধারণ নাগরিকদের সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে না যেতে আহ্বান জানান তিনি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিএসএফ সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, যাতে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হয়েছে। এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি বিজিবির উচ্চপর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিকরা যে আম গাছ কেটে ফেলেছে, এজন্য বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে তারা ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।’
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি চৌকা সীমান্তে আইন অমান্য করে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এতে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এর দশ দিন যেতে না যেতেই সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। -ইউএনবি
জাতীয়
চাঁপাই সীমান্তে ফের উত্তেজনা : মুখোমুখি দুই দেশের নাগরিক
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ সীমান্তে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী—বিএসএফের সামনেই বাংলাদেশিদের লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করছে ভারতীয় নাগরিকরা। ওপার থেকে টিয়ারশেল ছুড়তেও দেখা গেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল বিজিবি।
স্থানীয় বাংলাদেশিদের অভিযোগ, সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক ও বিএসএফ সদস্য। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয়রা। ফলে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এ সময় দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
উপস্থিত কয়েকজন বলেন, বিএসএফ সদস্যরা হঠাৎ করেই কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় তারা একাধিক ককটেল ফাটান। পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন বিএসএফ সদস্যরা।
বিকাল সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে থেমে থেমে উত্তেজনা চলছে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন তারা। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি চৌকা সীমান্তে আইন অমান্য করে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এতে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। -ইউএনবি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ সীমান্তে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী—বিএসএফের সামনেই বাংলাদেশিদের লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করছে ভারতীয় নাগরিকরা। ওপার থেকে টিয়ারশেল ছুড়তেও দেখা গেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল বিজিবি।
স্থানীয় বাংলাদেশিদের অভিযোগ, সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক ও বিএসএফ সদস্য। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয়রা। ফলে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এ সময় দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
উপস্থিত কয়েকজন বলেন, বিএসএফ সদস্যরা হঠাৎ করেই কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় তারা একাধিক ককটেল ফাটান। পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন বিএসএফ সদস্যরা।
বিকাল সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে থেমে থেমে উত্তেজনা চলছে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন তারা। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি চৌকা সীমান্তে আইন অমান্য করে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এতে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। -ইউএনবি
জাতীয়
ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরাইলি বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা
ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর রাজধানী তেলআবিবের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার সকালে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।
ইসরাইলি টিভি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে অধিকৃত তেলআবিব এবং আল-কুদস অঞ্চলে সাইরেন বাজানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরাইলের সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইয়েমেন থেকে ছোঁড়া হয়েছে। আর এ হামলার ফলে অধিকৃত কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে পালানোর সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ অবস্থায় ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর হয়েছে এবং হামলার উৎস সম্পর্কে তদন্ত চালাচ্ছে।
এদিকে, ইয়েমেন থেকে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর অধিকৃত তেলআবিব এবং তার আশপাশের এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠার খবর পাওয়া গেছে।
ইহুদিবাদী গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার সকালে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে তেলআবিব এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় সাইরেন সক্রিয় হয়।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা আতঙ্কিত হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে পালাচ্ছে।
ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।#
আন্তর্জাতিক
২০২৪ সালে বাংলাদেশকে নিয়ে ৭২ ভারতীয় গণমাধ্যমে অপতথ্য
২০২৪ সালে বাংলাদেশকে নিয়ে ৭২টি ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ।
রিউমর স্ক্যানার আজ (শনিবার) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাবহুল একটি বছর পার করল বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে নিয়মিত নানান ইস্যুর পাশাপাশি ছিল জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের অবসান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেই বাংলাদেশকে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন জটিলতার পাশাপাশি গত বছর সম্মুখীন হতে হয় ভারতীয়দের অপতথ্যের প্রবাহেরও।
গত বছর রিউমর স্ক্যানারে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সময়ে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বাংলাদেশ নিয়ে অন্তত ১৪৮টি ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়। অর্থাৎ, প্রতি আড়াই দিনে ভারতীয়রা বাংলাদেশকে নিয়ে একটি করে ভুল তথ্য প্রচার করেছে। এর মধ্যে ভারতীয় ৭২টি গণমাধ্যম ৩২টি বিষয়ে মোট ১৩৭টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেগুলোতে বাংলাদেশকে নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার৷
আগস্ট ডিসেম্বর দুই মাসেই শতাধিক অপতথ্য
গেল কয়েক বছর ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট, পেজসহ সে দেশের মূল ধারার গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশকে জড়িয়ে নিয়মিত ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসেও এই প্রবণতা নিয়মিত ঘটনা হিসেবে লক্ষ করছিল রিউমর স্ক্যানার। তবে পরের মাস অর্থাৎ আগস্টে বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সুযোগ নিয়ে ভারতীয়দের অপপ্রচার কয়েকগুণ বেড়ে যায়৷ প্রথম ছয় মাসে মাত্র ১২টি অপতথ্য ছড়ালেও আগস্টে এক মাসেই প্রচার হয়েছে ৫৩টি অপতথ্য। পরের তিন মাস কিছুটা কমলেও ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ইস্যুতে ভর করে ফের আগস্টের মতো একই সংখ্যক (৫৩) অপতথ্য প্রচার করেছে ভারতীয়রা।
২০২৪ সালে রিউমর স্ক্যানারে প্রকাশিত বাংলাদেশকে জড়িয়ে ছড়ানো ভারতীয়দের অপতথ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, এই সময়ে পুরোপুরি মিথ্যা সম্বলিত ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে ১০২টি। এছাড়া, বিভ্রান্তিকর রেটিং দেওয়া হয়েছে ৪২টি। বিকৃত রেটিং পেয়েছে চারটি।
ভয়াবহতা এক্সে, চিন্তা ফেসবুক নিয়েও
বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতীয়দের অপতথ্য প্রচারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া প্লাটফর্ম মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স (সাবেক টুইটার)। গেল বছর ১৪৮টি অপতথ্যের মধ্যে ১১৫টিই এক্সের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে প্রচারের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
এক্স ছাড়াও বাংলাদেশকে নিয়ে গত বছর ফেসবুকে ভারতীয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে অর্ধশতাধিক অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। অপতথ্য প্রচারের তালিকায় আছে ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামের নামও। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমও অন্তত ৩২টি ঘটনায় অপতথ্য প্রচার করেছে।
রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণ বলছে, এক্সসহ ভারত থেকে পরিচালিত এবং ভারতীয়দের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টের বদৌলতে গেল বছর বাংলাদেশকে নিয়ে ছড়ানো অপতথ্যগুলো দেখা হয়েছে অন্তত ২৫ কোটি বার।
সাম্প্রদায়িক অপতথ্যই শতাধিক
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময়ে গেল বছরের আগস্ট থেকে ভারতীয়দের অপতথ্য প্রচারের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর সরকারবিহীন পরের তিনদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলা হয় বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের বাড়ি ও স্থাপনায়ও। এসব ঘটনার মধ্যেই সাম্প্রদায়িক ভুল তথ্য ও অপতথ্যের ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ও সংবাদমাধ্যমে। গত বছর ভারতীয়দের ছড়ানো যে ১৪৮টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার, তার মধ্যে ১১৫টিই সাম্প্রদায়িক অপতথ্য। গেল বছর সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের প্রচারের বড় এক মাধ্যম হয়ে ওঠে এক্স। আগস্টেই এক্সে ৫১টি সাম্প্রদায়িক অপতথ্য শনাক্ত করে রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট ৫ থেকে ১৩ আগস্টের মধ্যে এক্সে এমন ৫০টি অ্যাকাউন্ট খুঁজে বের করেছিল, যেগুলোতে বাংলাদেশের আগস্টের ঘটনার বিভিন্ন ছবি, ভিডিও ও তথ্যকে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে প্রচার করা হয়। এসব অ্যাকাউন্টের প্রতিটির অন্তত একটি পোস্টে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য ও ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ পেয়েছিল রিউমর স্ক্যানার। এসব অ্যাকাউন্টে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে প্রচারিত ওই পোস্টগুলো দেড় কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে। আরও একাধিক অ্যাকাউন্ট ও ভারতীয় গণমাধ্যমের বদৌলতে এসব অপতথ্য সে সময় ১০ থেকে ১২ গুণ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল বলে অনুমান করে রিউমর স্ক্যানার।
আগস্ট পরবর্তী সময়েও এসব এক্স অ্যাকাউন্ট বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রমাগত অপতথ্যের প্রচার চালিয়ে গেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ইস্যুতে ডিসেম্বরে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের হার ফের বেড়ে যায় এক্সে। সে সময় এক্সে শনাক্ত হয় ৪১টি অপতথ্য। এই দুই মাসসহ গেল বছর এক্সে ভারতীয়দের ছড়ানো সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের সংখ্যা অন্তত ১০৭টি।
সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের এই ক্যাম্পেইনে ভারতীয় গণমাধ্যমও রেখেছে ভূমিকা। অন্তত ১০টি ঘটনায় ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে জড়িয়ে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই), এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জি নিউজ, আজতক, রিপাবলিক বাংলা'র মতো মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে।
৭২ গণমাধ্যমে অপতথ্যের হদিস
রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেকগুলো বিশ্লেষণ করে ৩২টি ঘটনায় দেশটির ৭২টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে। এই সংবাদমাধ্যমগুলোতে সর্বোচ্চ ১০টি থেকে সর্বনিম্ন একটি ভুল তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে। ৭২টি সংবাদমাধ্যমে থাকা ১৩৭টি প্রতিবেদন যাচাই করে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।
পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচারে প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতের বাংলা ভাষার স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল 'রিপাবলিক বাংলা'। ৩২টি ঘটনার মধ্যে ১০টিতেই এই চ্যানেল ভুল তথ্য প্রচার করেছে।
এই তালিকায় পরের তিন অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হিন্দুস্তান টাইমস, জি ২৪ ঘণ্টা ও আজতক। পঞ্চম অবস্থানে যৌথভাবে রয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, মিন্ট, ইন্ডিয়া টুডে, টিভি নাইন, ওয়ার্ল্ড উজ ওয়ান নিউজ (ডব্লিউআইওএন) ও এই সময়।
মুসলিমকে হিন্দু বানিয়ে অপপ্রচার বেশি
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারত থেকে একটি সমন্বিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু হয়, যা মূলত হিন্দুত্ববাদী এক্স অ্যাকাউন্টগুলোর দ্বারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুয়া খবর এবং সাম্প্রদায়িক প্রচারণার মাধ্যমে গতিশীলতা লাভ করে। এসব অ্যাকাউন্টগুলোর পাশাপাশি সে সময় থেকেই অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ভারতের গণমাধ্যমগুলোতেও অপতথ্যের প্রচার-প্রসার লাভ করে। রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণে এসব অপতথ্যের প্রচারের স্বতন্ত্র ধরন লক্ষ করা গেছে। এই ধরনের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণটি হলো, কোনো একজন মুসলিম ঘটনাক্রমে হামলা বা নিগ্রহের শিকার হলে সেই ব্যক্তিকে হিন্দু দাবি করে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য সৃষ্টি করে প্রচার করা হয়েছে৷ ২০২৪ সালে এমন অন্তত ৩৬টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। আরেকটি পরিচিত ধরন হচ্ছে, ভিন্ন দেশ এমনকি ভারতেরই কোনো ঘটনাকে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া। এমন অন্তত ১৩টি ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
এছাড়া, রাজনৈতিক সহিংসতাকে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হিসেবে দেখানো, মুসলিমদের স্থাপনায় হামলাকে হিন্দুদের স্থাপনায় হামলা দাবি, ভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে হিন্দুদের স্থাপনায় হামলার দাবি, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে একটি জঙ্গি বা ইসলামিক শাসনের উত্থান হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গণধর্ষণ ও হত্যার দাবির মাধ্যমে নিয়মিত অপতথ্যের প্রচার হয়েছে সীমান্তের ওপার থেকে। 'জয় বাংলা' স্লোগান নিষিদ্ধের ভুয়া দাবি, ড. ইউনূসের অসুস্থতা নিয়ে অপপ্রচার, শেখ হাসিনার ভুয়া চিঠি, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি বাহিনীর বাংলাদেশে টহল দেওয়ার ভুয়া দাবির মতো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানান ইস্যুতেও অপতথ্যের প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর পাশাপাশি এ সময় সরব ছিল দেশটির মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোও।
ব্যক্তি-বাহিনী-দলকে জড়িয়ে অপপ্রচার
বাংলাদেশকে জড়িয়ে গত বছর ভারত থেকে যেসব অপপ্রচার চালানো হয়েছে তাতে ব্যক্তি হিসেবে সবচেয়ে বেশি জড়ানো হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। তাকে জড়িয়ে অন্তত চারটি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে দুইটি করে, অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন ও ছাত্রলীগ নেত্রী আতিকা বিনতে হোসাইনকে জড়িয়ে একটি করে অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। এর বাইরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে ছয়টি, বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে দুইটি, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে নিয়ে একটি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ে দুইটি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। অপতথ্যের শিকারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দলগুলোও। ইসকনের বাংলাদেশ শাখা নিয়ে চারটি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে দুইটি এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিয়ে একটি অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সময়ে সময়ে ইস্যুভিত্তিক সংঘবদ্ধ অপপ্রচার
বাংলাদেশে গত বছর সময়ে সময়ে নানান ইস্যুতে সরগরম ছিল ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যম। বছরজুড়ে রিউমর স্ক্যানার এমন অন্তত ৪০টি ইস্যুতে ভুয়া তথ্যের প্রচার দেখতে পেয়েছে। এর মধ্যে অন্তত আটটি ইস্যুতে ভারত থেকে পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট এবং সে দেশের গণমাধ্যমকেও ভুয়া তথ্য প্রচার করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপতথ্যের প্রচার ঘটেছে নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার-পরবর্তী সময়ে। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত থেকে অন্তত পাঁচটি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া অক্টোবরের দুর্গাপূজাকে ঘিরে চারটি, নভেম্বরে চট্টগ্রামে হাজারী গলিতে সহিংসতাকে ঘিরে তিনটি এবং মার্চে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ অপহরণ, আগস্টের বন্যা, সেপ্টেম্বরের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, নভেম্বরের যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ও একই মাসে শহীদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে একটি করে অপতথ্যের প্রচার চালানো হয়েছে সীমান্তের ওপার থেকে।
ভুয়া তথ্যের প্রচারে দায়িত্বশীলরাও
ভারতের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি গেল বছর বাংলাদেশকে নিয়ে অপতথ্যের প্রবাহের প্রসারে ভূমিকা রেখেছেন। এই তালিকায় দেশটির রাজনীতিবিদদের মধ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী অন্তত একটি, বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল অন্তত তিনটি, ত্রিপুরা রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী কর্তৃক অন্তত একটি করে অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন, ভারতীয় গণমাধ্যম অপি ইন্ডিয়ার সম্পাদক নুপুর শর্মাসহ আইনজীবী ও নানা পেশার ব্যক্তিত্বরা অপতথ্যের এই প্রবাহে নিজেদের নাম লিখিয়েছেন।#
জাতীয়
২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোক: এস আলমের ৮৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, স্ত্রী ফারজানা পারভীন ও তাঁর পরিবারের ১৬ সদস্যের ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং ৮৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন পৃথক দুটি আদেশে এই নির্দেশনা দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি রেজাউল করিম রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। দুদকের উপপরিচালক মো. আবু সাঈদ এই আবেদন করেন।
এস আলম গ্রুপের অন্য যাদের সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা হলেন—এস আলমের মা চেমন আরা বেগম, ভাই মোহাম্মদ আবুদুল্লাহ হাসান, ওসমান গনি, রাশেদুল আলম, শহিদুল আলম, এস আলমের ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল আলম মাহির ও আসাদুল আলম, ওসমানের স্ত্রী ফারজানা বেগম এবং এস আলমের ভাই আবদুস সামাদের স্ত্রী শাহ ফেরদানা।
প্রথম আবেদনে দুদক কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, এস আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির ১৯টি অ্যাকাউন্টে ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৩ টাকা জমা দিয়েছেন এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৬৮টি অ্যাকাউন্টে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৮ টাকা জমা দিয়েছেন। যে কোনো সময় অ্যাকাউন্ট থেকে সেই অর্থ স্থানান্তর বা পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেসব অ্যাকাউন্ট যাতে তারা স্থানান্তর ও উত্তোলন করতে না পারেন, সে জন্য ওই সব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
ওই কর্মকর্তা তাঁর আরেকটি আবেদনে বলেছেন, এস আলম, তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা চট্টগ্রাম ও ঢাকার গুলশানে ভবন ও প্লট নির্মাণ ও কিনেছেন, যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি ২৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা। এসব স্থাবর সম্পদ যাতে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য আদেশ প্রয়োজন।
এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর একই আদালত সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাঁর পরিবারের ১১ সদস্যের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, স্ত্রী ফারজানা পারভীন ও তাঁর পরিবারের ১৬ সদস্যের ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং ৮৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি রেজাউল করিম রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। দুদকের উপপরিচালক মো. আবু সাঈদ এই আবেদন করেন।
জাতীয়
অবশেষে ব্রিটেনের মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান তিনি। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এসবের মধ্যে দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল। তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। এছাড়া নিজের সকল আর্থিক বিষয়াবলীর ব্যাপারে তদন্তকারীকে তথ্য দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি।
তিনি মন্ত্রী থাকলে সরকার তার কাজে মনযোগ দিতে পারবে না এমন কথা উল্লেখ করে টিউলিপ বলেছেন, “এ কারণে আমি আমার মন্ত্রির পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, পেনসনমন্ত্রী এমা রেনল্ডস টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান তিনি। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
আলোচিত খবর
এ বছরের আগস্টের মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।-ইউএনবি
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই, কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।-ইউএনবি
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই, কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
জাতীয়
এবার দিল্লিতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনারকে তলব
সীমান্তের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র দফতরে তলবের পরদিনই দিল্লিতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে ভারত।
আজ (সোমবার) ভারতের এএনআই, এনডিটিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে।
আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারতের ৪,১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের নির্দিষ্ট পাঁচটি স্থানে ভারত বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগে রবিবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়। এর পরদিনই দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৈঠক শেষে দুপুরে দিল্লির সাউথ ব্লক থেকে বের হতে দেখা যায় উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে।
বাংলাদেশ সীমান্তে নির্দিষ্ট পাঁচটি স্থানে বেড়া দেয়ার চেষ্টা করছে অভিযোগে গতকাল রোববার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে ঢাকা। এদিন বিকেল ৩টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান প্রণয় ভার্মা। সেখানে পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে বৈঠক করেন তিনি।
বৈঠকে প্রণয় ভার্মা বলেন, ঢাকা এবং নয়াদিল্লির নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে বেড়া নির্মাণের বিষয়ে সমঝোতা রয়েছে। আমাদের দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফ এবং বিজিবি (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)- এই বিষয়ে যোগাযোগ করছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে এই সমঝোতা বাস্তবায়িত হবে এবং সীমান্তে অপরাধ দমনে একটি সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে স্থিতিশীল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কিন্তু বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি করেছে।#
আন্তর্জাতিক
এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতুর সাড়ে ১৩ কিলোমিটার চারলেন সড়কের কাজে ধীরগতি
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতুর গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত করণের কাজে ব্যাপক ধীরগতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একটি ফ্লাইওভার, দুইটি আন্ডারপাস ও একটি সার্ভিস লেন নির্মাণে এখনও কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। অথচ বাসেক (বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ) বলছে- ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজে ধীরগতি থাকলেও মানের দিক দিয়ে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। বাসেক কর্তৃপক্ষ নির্মাণ কাজ সার্বক্ষণিক দেখভাল করছে।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর উপর নির্মিত সেতু উদ্বোধনের পর থেকে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৩টি জেলার যোগাযোগের সহজ মাধ্যমে পরিণত হয় যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়ক। ফলে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকার মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করণের প্রকল্প হাতে নেয়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের পর মির্জাপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেনে উন্নীত করণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হচ্ছে। ঈদের সময় যা বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যায়। এলেঙ্গা থেকে সেতুমুখী সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। ওই সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ শেষ না হওয়ায় গত ঈদের সময়গুলোতে মহাসড়কে যাতায়াতকারী চালক ও যাত্রী সাধারণ মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হয়। ওই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন বিকল্প সড়ক হিসেবে এলেঙ্গা থেকে ভূঞাপুর লিংক রোড দিয়ে সেতু পর্যন্ত একলেনে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।
সড়ক ও জনপথ(সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প (প্যাকেজ-৫) ফেইজ-২ এর অধীনে আইনি প্রক্রিয়া শেষে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। ১৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে একটি ফ্লাইওভার, ৮টি ব্রিজ, ১০টি কালভার্ট ও দুটি আন্ডার পাস এবং একটি সার্ভিস লেন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০১ কোটি টাকা।
স্থানীয়রা জানায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড প্রকল্পের কাজে অহেতুক সময় ক্ষেপন না করলে অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। মহাসড়কে সেতুমুখী ও এলেঙ্গামুখী অংশে প্রায় দুই কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হলেও এখন সাড়ে ১১ কিলোমিটারের কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার, কয়েকটি ব্রিজ, দুইটি আন্ডারপাস ও সার্ভিস লেনের কাজ ধরাই হয়নি। তাদের কাজে বেশ গাফিলতি রয়েছে।
মহাসড়ক সংলগ্ন জোকারচরের শফিকুল ইসলাম, সল্লার মামুন, হাতিয়া গ্রামের বশির, আনালিয়াবাড়ির নুরুল হক সহ অনেকেই জানান, মহাসড়কের আশপাশের মানুষ প্রতিনিয়ত নানা ভোগান্তির শিকার হয়। প্রতিদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে মহাসড়কে গাড়ির চাপ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। প্রতিবার ঈদের সময়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ মারাত্মক যানজটে বাড়ি ফেরা ও কর্মস্থলে যেতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তারা জনগনের ভোগান্তি লাঘবে আসন্ন পবিত্র রমজানের আগে চরলেনে উন্নীতকরণের কাজ শেষ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারীর দাবি জানান।
স্থানীয় হাসমত, কাদের, ফরমান আলী, নজরুল ইসলাম সহ বেশ কয়েক যুবক জানান, যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়কে নির্মাণ কাজে যে লাল বালু ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। তাদের মতে, নিম্নমানের এসব বালু অনেকটা পাহাড়ি লাল মাটির মত। এসব বালু দিয়ে কাজ করলে মহাসড়কের স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। নির্মাণ কাজ তদারকি প্রতিষ্ঠানকে কঠোর হওয়ার দাবি জানান তারা।
মহাসড়ক সংলগ্ন ধলাটেংগর গ্রামের ওমর গাজীর ছেলে শরীফ জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের যে কাজ করছে সেটি খুবই ধীরগতিতে চলছে। অন্যকোন বিদেশি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পেলে কাজের গুণগত মান অনেক ভালো হতো এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হতো। ফলে চালক ও যাত্রী সাধারণের ভোগান্তিও অল্প সময়েই লাঘব হতো।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রবিউল আওয়াল জানান, তাদের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বর্তমানে মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করণের কাজ প্রায় ৬৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের গুণগত মান বা স্থায়িত্বের দিক দিয়ে কোনো গাফিলতি নেই। স্থানীয় যুবকরা কাজে ব্যবহৃত বালুর গুণগত মান নিয়ে আপত্তি তোলায় তাদের নিজস্ব পরীক্ষাগারে বালুসহ প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যথাযথভাবে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক) কনসালটেণ্ট প্রকৌশলী পুলক দাস জানান, মহাসড়কের কাজে যে মোটা বালু ব্যবহার করা হয় কংক্রিটের জন্য এটার একটা পোর্ট আছে। যেটা ২পয়েণ্ট ২ -এর উপরে লাগে- সেটি তারা নিয়মিত দেখভাল করে থাকেন। সেক্ষেত্রে যদি পোর্ট ২ পয়েণ্ট ২ -এর নিচে থাকে তাহলে সেটি ব্যবহার করা হয়না।
তিনি আরও জানান, যে বালু দিয়ে ৫নম্বর ব্রিজের পাশে ধলাটেংগরে কাজ চলছিল। স্থানীয়দের আপত্তির মুখে সে বালুর কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। বালুর নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষাগারের টেস্টে গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হলে ব্যবহার করা হবে। অন্যথায় ফেরত দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক) যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, তারা এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করণের কাজ সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড দেশের স্বনামখ্যাত একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। তাদের কাজের গুণগত মান নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তবে তাদের কাজে ধীরগতি রয়েছে।
যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতুর গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত করণের কাজে ব্যাপক ধীরগতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একটি ফ্লাইওভার, দুইটি আন্ডারপাস ও একটি সার্ভিস লেন নির্মাণে এখনও কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। অথচ বাসেক (বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ) বলছে- ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজে ধীরগতি থাকলেও মানের দিক দিয়ে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। বাসেক কর্তৃপক্ষ নির্মাণ কাজ সার্বক্ষণিক দেখভাল করছে।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর উপর নির্মিত সেতু উদ্বোধনের পর থেকে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৩টি জেলার যোগাযোগের সহজ মাধ্যমে পরিণত হয় যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়ক। ফলে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকার মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করণের প্রকল্প হাতে নেয়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের পর মির্জাপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেনে উন্নীত করণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হচ্ছে। ঈদের সময় যা বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যায়। এলেঙ্গা থেকে সেতুমুখী সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। ওই সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ শেষ না হওয়ায় গত ঈদের সময়গুলোতে মহাসড়কে যাতায়াতকারী চালক ও যাত্রী সাধারণ মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হয়। ওই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন বিকল্প সড়ক হিসেবে এলেঙ্গা থেকে ভূঞাপুর লিংক রোড দিয়ে সেতু পর্যন্ত একলেনে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।
সড়ক ও জনপথ(সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প (প্যাকেজ-৫) ফেইজ-২ এর অধীনে আইনি প্রক্রিয়া শেষে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। ১৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে একটি ফ্লাইওভার, ৮টি ব্রিজ, ১০টি কালভার্ট ও দুটি আন্ডার পাস এবং একটি সার্ভিস লেন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০১ কোটি টাকা।
স্থানীয়রা জানায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড প্রকল্পের কাজে অহেতুক সময় ক্ষেপন না করলে অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। মহাসড়কে সেতুমুখী ও এলেঙ্গামুখী অংশে প্রায় দুই কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হলেও এখন সাড়ে ১১ কিলোমিটারের কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার, কয়েকটি ব্রিজ, দুইটি আন্ডারপাস ও সার্ভিস লেনের কাজ ধরাই হয়নি। তাদের কাজে বেশ গাফিলতি রয়েছে।
মহাসড়ক সংলগ্ন জোকারচরের শফিকুল ইসলাম, সল্লার মামুন, হাতিয়া গ্রামের বশির, আনালিয়াবাড়ির নুরুল হক সহ অনেকেই জানান, মহাসড়কের আশপাশের মানুষ প্রতিনিয়ত নানা ভোগান্তির শিকার হয়। প্রতিদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে মহাসড়কে গাড়ির চাপ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। প্রতিবার ঈদের সময়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ মারাত্মক যানজটে বাড়ি ফেরা ও কর্মস্থলে যেতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তারা জনগনের ভোগান্তি লাঘবে আসন্ন পবিত্র রমজানের আগে চরলেনে উন্নীতকরণের কাজ শেষ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারীর দাবি জানান।
স্থানীয় হাসমত, কাদের, ফরমান আলী, নজরুল ইসলাম সহ বেশ কয়েক যুবক জানান, যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়কে নির্মাণ কাজে যে লাল বালু ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। তাদের মতে, নিম্নমানের এসব বালু অনেকটা পাহাড়ি লাল মাটির মত। এসব বালু দিয়ে কাজ করলে মহাসড়কের স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। নির্মাণ কাজ তদারকি প্রতিষ্ঠানকে কঠোর হওয়ার দাবি জানান তারা।
মহাসড়ক সংলগ্ন ধলাটেংগর গ্রামের ওমর গাজীর ছেলে শরীফ জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের যে কাজ করছে সেটি খুবই ধীরগতিতে চলছে। অন্যকোন বিদেশি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পেলে কাজের গুণগত মান অনেক ভালো হতো এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হতো। ফলে চালক ও যাত্রী সাধারণের ভোগান্তিও অল্প সময়েই লাঘব হতো।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রবিউল আওয়াল জানান, তাদের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বর্তমানে মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করণের কাজ প্রায় ৬৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের গুণগত মান বা স্থায়িত্বের দিক দিয়ে কোনো গাফিলতি নেই। স্থানীয় যুবকরা কাজে ব্যবহৃত বালুর গুণগত মান নিয়ে আপত্তি তোলায় তাদের নিজস্ব পরীক্ষাগারে বালুসহ প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যথাযথভাবে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক) কনসালটেণ্ট প্রকৌশলী পুলক দাস জানান, মহাসড়কের কাজে যে মোটা বালু ব্যবহার করা হয় কংক্রিটের জন্য এটার একটা পোর্ট আছে। যেটা ২পয়েণ্ট ২ -এর উপরে লাগে- সেটি তারা নিয়মিত দেখভাল করে থাকেন। সেক্ষেত্রে যদি পোর্ট ২ পয়েণ্ট ২ -এর নিচে থাকে তাহলে সেটি ব্যবহার করা হয়না।
তিনি আরও জানান, যে বালু দিয়ে ৫নম্বর ব্রিজের পাশে ধলাটেংগরে কাজ চলছিল। স্থানীয়দের আপত্তির মুখে সে বালুর কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। বালুর নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষাগারের টেস্টে গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হলে ব্যবহার করা হবে। অন্যথায় ফেরত দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক) যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, তারা এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করণের কাজ সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড দেশের স্বনামখ্যাত একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। তাদের কাজের গুণগত মান নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তবে তাদের কাজে ধীরগতি রয়েছে।
জাতীয়
বগুড়া বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন- বিমানবাহিনী প্রধানের
এম আব্দুর রাজ্জাক, বগুড়া থেকে:
১২ জানুয়ারি, রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বগুড়া বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (পরিচালন) এয়ার ভাইস মার্শাল এ এস এম ফখরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া, বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা ও বিমানবাহিনী এবং বেবিচক এর ঊর্ধ্বতন ও অন্যান্য কর্মকর্তারাও এতে উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, ‘এই বিমানবন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত ছিল, তবে বর্তমানে এর সার্বিক অবস্থা সন্তোষজনক। এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর ফলে বিমানবন্দরটি চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতি, পর্যটন, পরিবহন ব্যবস্থা এবং বিনিয়োগের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ‘এই রানওয়ে ভিভিআইপি ফ্লাইটের বিকল্প এবং জরুরি অবতরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারযোগ্য, যা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে উদ্ভূত যেকোনও পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে বন্যার সময় ত্রাণ কার্যক্রম এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত মোতায়েন নিশ্চিত করতে এটি একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
বিমানবাহিনী প্রধান আরও জানান, রানওয়ের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের ব্যাপারে চেয়ারম্যান বেবিচক এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা হয়েছে এবং বেবিচক চেয়ারম্যান একমত পোষণ করেছেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রানওয়ের উন্নতি সাধন এবং অভ্যন্তরীণ বিমান উড্ডয়নের জন্য পরবর্তীতে রানওয়ে বর্ধিতকরণের বিষয়ে বেবিচক ব্যবস্থা নেবে। তিনি বিমানবন্দর এলাকা ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শনকালে বিমানবাহিনী প্রধান দুস্থদের মাঝে কম্বলও বিতরণ করেন।
১২ জানুয়ারি, রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বগুড়া বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
জাতীয়
টিউলিপ সরাসরি ডাকাতির সুবিধাভোগী: সানডে টাইমসকে ড. ইউনূস
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ব্রিটেনের অর্থ ও নগরবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবার যেসব সম্পত্তি পেয়েছেন ও ব্যবহার করেছেন, সেগুলোর জন্য তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ সংবাদপত্র সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, টিউলিপের লন্ডনের সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্তে যদি প্রমাণ হয়, তিনি 'প্লেইন (সরাসরি) ডাকাতি'র সুবিধাভোগী, তাহলে সম্পত্তিগুলো ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছেন, দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাৎ তদন্তের অংশ হিসেবে ব্রিটেনে টিউলিপের ব্যবহৃত লন্ডনের বাড়িগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।
সম্প্রতি সানডে টাইমসসহ ব্রিটেনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, পানামা পেপারসে কেলেঙ্কারিতে নাম থাকা একটি অফশোর কোম্পানি কিনেছিল, এমন একটি বাড়িতে দীর্ঘদিন বাস করেছেন টিউলিপ। বাড়িটি লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এলাকায়। ওই অফশোর কোম্পানির সঙ্গে দুজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। যদিও টিউলিপ এর আগে অভিযোগ তুলেছিলেন, এই ধরনের ট্রাস্ট ব্যবহার করা হয় স্বচ্ছতা না থাকলে।
টিউলিপ সিদ্দিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। হাসিনা রাশিয়ার সঙ্গে যে পরমাণু শক্তি চুক্তি করেছিলেন, সেটি নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, টিউলিপ ওই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং এ চুক্তি থেকে লাভবান হয়েছেন।
হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপ অবশ্য এই চুক্তি থেকে লাভবান হওয়া বা কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, সিদ্দিকের মতো একজন দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই যখন অভিযোগের মুখে থাকেন, তা আসলে 'নির্মম রসিকতা' হয়ে যায়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'তিনি দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হলেন, তারপর [লন্ডনের সম্পত্তি নিয়ে] নিজের পক্ষে সাফাই গাইলেন। হয়তো আগে বিষয়টি বুঝতে পারেননি। কিন্তু এখন যখন বুঝতে পেরেছেন, তখন তো বলা উচিত: "দুঃখিত, তখন আমি বিষয়টি বুঝিনি, আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছি এবং পদত্যাগ করছি।" কিন্তু তিনি তা না করে উল্টো নিজের পক্ষে সাফাই গাইছেন।'
তবে ড. ইউনূস স্বীকার করেছেন, টিউলিপের পদত্যাগ করা উচিত কি না, তা তার বলার বিষয় নয়।
প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রতিক এক অফিশিয়াল প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশের এলিট শ্রেণি প্রতি বছর দেশ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। এই অর্থের একটি অংশ বাড়িসহ বিভিন্ন সম্পত্তি কেনায় ব্যবহার করা হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, 'প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে কীভাবে টাকা চুরি হয়েছে। কিন্তু এটা চুরি নয়—কেউ চুরি করলে তা গোপন রাখে। এটা প্লেইন ডাকাতি।'
শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা লন্ডনে যেসব সম্পত্তি ব্যবহার করেছেন, সেগুলো এই ধরনের ডাকাতির অংশ হতে পারে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'অবশ্যই, এটা প্লেইন ডাকাতির ব্যাপার। আর কিছু নয়।'
তিনি বলেন, 'যুক্তরাজ্যের কোনো পার্লামেন্ট সদস্য যদি এতে জড়িত থাকেন, তবে এটা অবশ্যই বড় ইস্যু। …আমরা তো [আগের সরকারের] সব লুটপাটে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তাই আপনারা এই ইস্যু বিশ্ববাসীর নজরে আনায় আমরা স্বস্তি বোধ করছি।'
ড. ইউনূস আরও বলেন, দুর্নীতিতে গোটা বাংলাদেশ কলুষিত হয়ে গেছে। দুর্নীতির মাত্রা নিয়ে তিনি বলেন, '"কলুষিত" শব্দটিও খুব কম হয়ে যায়। [দেশ] পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। [হাসিনার শাসনামলে] বিন্দুমাত্র সততা বা স্বচ্ছতা ইচ্ছা ছিল না। তারা নির্দ্বিধায় সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।'
টিউলিপের সম্পত্তিগুলো নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত করা উচিত কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, 'অবশ্যই।' তিনি আরও বলেন, কমিশনের উচিত 'পুরো বিষয়টি' খতিয়ে দেখা।#
জাতীয়
জেলেনস্কি একজন ভিক্ষুক এবং প্রতারক: স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ভিক্ষুক এবং প্রতারক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মূলত বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের মধ্য দিয়ে প্রতারণা করে চলেছেন, এটি বন্ধ হওয়া দরকার।
চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার দেশের ভেতর দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে স্লোভাকিয়ায় রাশিয়ার গ্যাস সরররাহ বন্ধ করে দেন। এরপর ইউক্রেন এবং স্লোভাকিয়ার মধ্যে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
শুক্রবার স্লোভাক পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বৈঠকে রবার্ট ফিকো বলেন, “আমি এখানে জেলেনস্কির হাত ধরার জন্য আসেনি এবং আমি স্বীকার করছি যে, আমি তার উপর মাঝে মাঝে বিরক্ত হই। জেলেনস্কি ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ভিক্ষা করছেন এবং প্রতারণা করছেন, অন্যদের কাছে অর্থ চাইছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।”
ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে যে সহায়তা দিচ্ছে, অনেক আগে থেকেই তার সমালোচনা করে আসছেন রবার্ট ফিকো। তিনি শুরু থেকেই বলছেন, “যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়াকে হারানোর আশা করতে পারে না ইউক্রেন। সে কারণে তাদেরকে অবশ্যই সংঘাত বাদ দিয়ে কূটনৈতিক পথে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।”#
আন্তর্জাতিক
বিআরটিএ বিলুপ্তির হুঁশিয়ারি সড়ক ও পরিবহন উপদেষ্টার
“আমরা বিআরটিএকে ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখব; না হলে কঠোর সিদ্ধান্তে যাব,” বলেন তিনি।
নিজেদের কর্মতৎপরতা না বাড়ালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) বিলুপ্ত করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “বিআরটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খুব স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছি- তারা যে আচরণ করছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। তাদেরকে আমি এও বলেছি, সরকারের অনেক দপ্তর কিন্তু বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এটাও বলেছি বিআরটিএর পারফরমেন্সে যদি ইম্প্রুভমেন্ট (উন্নতি) না হয়, আমরা এটিকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করব।”
শনিবার ঢাকার বনানীতে বিআরটিএর কার্যালয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন উপদেষ্টা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
সংস্থাটির কার্যক্রমে ‘কিছুটা উন্নতি’ হলেও তা ‘গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছায়নি’ বলে মনে করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমরা বিআরটিএকে ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখব। না হলে কঠোর সিদ্ধান্তে যাব। তারা আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নতি করবে। বিআরটিএকে যে একমাসের সময় দেওয়া হয়েছিল, তাতে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের উন্নতি না হলেও কিছুটা উন্নতি হয়েছে।”
লাইসেন্স, ফিটনেস টেস্ট ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিআরটিএর বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
‘দুর্ঘটনা বেড়েছে’
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যের বরাতে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কথা বলছেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “সম্প্রতি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়কে দুর্ঘটনা নিয়ে তথ্য ও উপাত্ত আমাদের দিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় গত এক বছরে ৭ হাজার ২৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ১২ হাজারের বেশি। এটা এর আগের বছরের একই সময় থেকে ১২ শতাংশ বেশি। সড়ক দুর্ঘটনা আমরা কমাতে পারি নাই বরং প্রাণহানি বেড়েছে, এজন্য আমরা এটার দায়িত্ব গ্রহণ করছি।”
দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের অপরাধ স্বীকারের একটা বিষয় হিসেবে যারা সড়কে আহত-নিহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার্থে আইন অনুযায়ী অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি।
ফাওজুল কবির বলেন, “দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিআরটিএর যারা আছে তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। কারিগরি ত্রুটি বা মানুষ হয়ত অসুস্থ হয়ে পড়েছে…এই জাতীয় দুর্ঘটনা ছাড়া গাড়ির ফিটনেস নেই, চালকের লাইসেন্স নেই- এইসব দুর্ঘটনার জন্য বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সরাসরি দায়ী করা হবে। আইনানুগ ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে।”
‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রক্রিয়া সহজ হচ্ছে’
চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করার কাজও হচ্ছে বলে তুলে ধরেন উপদেষ্টা। বলেন, “আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল। এখন থেকে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থাটা আরও সহজ করা হবে, ফলপ্রসূ করা হবে। যারা নিরাপদে চালাতে পারবেন, তাদেরই লাইসেন্স দেওয়া হবে।”
চালকদের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিআরটিসি, এসিআইপি, পুলিশসহ যাদের এসব ট্রেনিং স্কুল আছে, সেখানে চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করব। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব এবং এর যাতে একটা গুণগত মান থাকে সে ব্যবস্থাও করব।”
লাইসেন্স দেওয়ার আগে চালকদের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলছেন তিনি।
“ড্রাইভারদের আই টেস্ট, ডোপ টেস্ট এগুলোর ওপরও জোর দিব। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আমরা সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করব। সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া বাকি আছে, আগামী মার্চের মধ্যেই সবগুলো ইস্যু হয়ে যাবে। গাড়ির মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও সহজ হবে।”
‘ফিটনেস টেস্টে কড়াকড়ি’
যানবাহনের ফিটনেস সনদ নিয়ে আরও কড়াকড়ি আরোপের কথা নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “গাড়ির ফিটনেস নবায়নের ক্ষেত্রেও আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নবায়নের সময় হলে বিআরটিএ থেকে হয়ত ১৫ দিনের একটা সময় বেঁধে দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে যিনি করাবেন না, তাকে আরেক দফা নোটিস দেওয়া হবে, এরপর কেউ না আসলে তার ফিটনেস সার্টিফিকেট বাতিল করা হবে। এটা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে। আপনার ফিটনেস নাই, আপনি সড়কে থাকতে পারবেন না।”
বিআরটিএর কার্যালয়ে এ বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, আইজিপি বাহারুল আলম উপস্থিত ছিলেন। -সূত্র : বিডিনিউজ২৪
নিজেদের কর্মতৎপরতা না বাড়ালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) বিলুপ্ত করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “বিআরটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খুব স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছি- তারা যে আচরণ করছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। তাদেরকে আমি এও বলেছি, সরকারের অনেক দপ্তর কিন্তু বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এটাও বলেছি বিআরটিএর পারফরমেন্সে যদি ইম্প্রুভমেন্ট (উন্নতি) না হয়, আমরা এটিকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করব।”
শনিবার ঢাকার বনানীতে বিআরটিএর কার্যালয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন উপদেষ্টা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
সংস্থাটির কার্যক্রমে ‘কিছুটা উন্নতি’ হলেও তা ‘গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছায়নি’ বলে মনে করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমরা বিআরটিএকে ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখব। না হলে কঠোর সিদ্ধান্তে যাব। তারা আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নতি করবে। বিআরটিএকে যে একমাসের সময় দেওয়া হয়েছিল, তাতে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের উন্নতি না হলেও কিছুটা উন্নতি হয়েছে।”
লাইসেন্স, ফিটনেস টেস্ট ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিআরটিএর বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
‘দুর্ঘটনা বেড়েছে’
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যের বরাতে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কথা বলছেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “সম্প্রতি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়কে দুর্ঘটনা নিয়ে তথ্য ও উপাত্ত আমাদের দিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় গত এক বছরে ৭ হাজার ২৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ১২ হাজারের বেশি। এটা এর আগের বছরের একই সময় থেকে ১২ শতাংশ বেশি। সড়ক দুর্ঘটনা আমরা কমাতে পারি নাই বরং প্রাণহানি বেড়েছে, এজন্য আমরা এটার দায়িত্ব গ্রহণ করছি।”
দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের অপরাধ স্বীকারের একটা বিষয় হিসেবে যারা সড়কে আহত-নিহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার্থে আইন অনুযায়ী অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি।
ফাওজুল কবির বলেন, “দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিআরটিএর যারা আছে তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। কারিগরি ত্রুটি বা মানুষ হয়ত অসুস্থ হয়ে পড়েছে…এই জাতীয় দুর্ঘটনা ছাড়া গাড়ির ফিটনেস নেই, চালকের লাইসেন্স নেই- এইসব দুর্ঘটনার জন্য বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সরাসরি দায়ী করা হবে। আইনানুগ ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে।”
‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রক্রিয়া সহজ হচ্ছে’
চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করার কাজও হচ্ছে বলে তুলে ধরেন উপদেষ্টা। বলেন, “আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল। এখন থেকে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থাটা আরও সহজ করা হবে, ফলপ্রসূ করা হবে। যারা নিরাপদে চালাতে পারবেন, তাদেরই লাইসেন্স দেওয়া হবে।”
চালকদের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিআরটিসি, এসিআইপি, পুলিশসহ যাদের এসব ট্রেনিং স্কুল আছে, সেখানে চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করব। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব এবং এর যাতে একটা গুণগত মান থাকে সে ব্যবস্থাও করব।”
লাইসেন্স দেওয়ার আগে চালকদের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলছেন তিনি।
“ড্রাইভারদের আই টেস্ট, ডোপ টেস্ট এগুলোর ওপরও জোর দিব। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আমরা সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করব। সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া বাকি আছে, আগামী মার্চের মধ্যেই সবগুলো ইস্যু হয়ে যাবে। গাড়ির মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও সহজ হবে।”
‘ফিটনেস টেস্টে কড়াকড়ি’
যানবাহনের ফিটনেস সনদ নিয়ে আরও কড়াকড়ি আরোপের কথা নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “গাড়ির ফিটনেস নবায়নের ক্ষেত্রেও আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নবায়নের সময় হলে বিআরটিএ থেকে হয়ত ১৫ দিনের একটা সময় বেঁধে দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে যিনি করাবেন না, তাকে আরেক দফা নোটিস দেওয়া হবে, এরপর কেউ না আসলে তার ফিটনেস সার্টিফিকেট বাতিল করা হবে। এটা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে। আপনার ফিটনেস নাই, আপনি সড়কে থাকতে পারবেন না।”
বিআরটিএর কার্যালয়ে এ বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, আইজিপি বাহারুল আলম উপস্থিত ছিলেন। -সূত্র : বিডিনিউজ২৪