শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

Logo
Add Image

আইন-আদালত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ: ১৬ জুলাই লিভ টু আপিল শুনানি

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক: অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানির জন্য ১৬ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেত্বাতাধীন আপিল বিভাগ এ দিন ধার্য করেন।

 

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহসিন রশিদ। 
গত ১৩ জানুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের পর সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে এই সরকার গঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। 

 

রায়ে হাইকোর্ট বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আইন মেনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবে গঠিত হয়েছে।

 

পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেন রিটকারী।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা সেদিন ভারতে পালিয়ে যান।

 

এমন পরিস্থিতিতে ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত জানতে চান রাষ্ট্রপ্রধান। এই মতামত জানতে চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ৮ আগস্ট মতামত দিলে তার ভিত্তিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।

 

পরে এই মতামতের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ।
রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানে নেই, এমন বিষয়ে রেফারেন্স চাওয়া যায় না। তা ছাড়া সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে আপিল বিভাগকে সুপ্রিম কোর্টের রুলস অনুসরণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল ও অন্যদের নোটিশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুনানি করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন এবং শপথ নিয়ে শুনানির জন্য নোটিশ দেওয়া হয়নি। প্রাথমিক শুনানির পর গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ আদেশটি প্রকাশ করা হয়।

 

৯ পৃষ্ঠার আদেশে বলা হয়, রিট আবেদনটি কেবল ভুল ধারণার ওপর ভিত্তি করেই করা হয়নি, আবেদনটি উসকানিমূলকও। 


এতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান এখনো কার্যকর এবং সম্পূর্ণভাবে সক্রিয়। তবে রিট আবেদনকারীর অবস্থান স্ববিরোধী। কারণ একদিকে বলছেন, গত ৫ আগস্টের পর বিদ্যমান সংবিধান চাপা পড়েছে, অন্যদিকে বিদ্যমান সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন এই রিট আবেদন করেছেন। অর্থাৎ সংবিধানের অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন এবং তা মেনে নিয়েছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অধীনে সংবিধানিক আদালত হিসেবে এই ধরনের অসাংবিধানিক আবেদন বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। ফলে রিট আবেদনটি পর্যবেক্ষণসহ সরাসরি খারিজ করা হল।

 

পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে মতামত দিয়েছেন, তা সাংবিধানিক কর্তৃত্বের অধীনেই দিয়েছেন এবং তা যথাযথভাবে কার্যকর হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ইতিহাসের এক বিরল পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে আপিল বিভাগের মতামত নিয়েছেন এবং সেই মতামত অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন। ফলে এটি (অন্তর্বর্তী সরকার) আইনগতভাবে যেমন সমর্থিত, তেমনি তা বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছা সমর্থিতও। গত বছর জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। আশা করা যায়, দেশের মানুষ বহু যত্নে এই ইতিহাস লালন করবে।
 

মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ২০২৫-০৫-১৪ ২৩:৩৬:৩১

সর্বশেষ

Logo

সম্পাদক : আবু তাহের

© ২০১৪-২০২৫ টাঙ্গাইল দর্পণ, অনলাইন নিউজ পেপার ২৪/৭