রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১
প্রকাশিত: ২০২৫-০২-০৮ ২০:২৫:১৪
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
শনিবার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইট এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের ওয়েবসাইটে রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। উল্লেখ্য, ছয় কমিশনের সর্বসম্মত যে সুপারিশমালা প্রকাশ করা হয়েছিল, তা এখনো ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে অক্টোবরে প্রথম ধাপে রাষ্ট্রের ছয়টি খাত সংস্কারে কমিশন গঠন করে।
এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়া হয়। জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হয় ৫ ফেব্রুয়ারি।
এখন বাকি রয়েছে নভেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে গঠিত আরও পাঁচ কমিশনের (গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন) প্রতিবেদন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা
ছয়টি সংস্কার কমিশন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঐকমত্য কমিশন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ; যিনি সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও প্রধান।
বাকি পাঁচ সংস্কার কমিশন প্রধানরা হচ্ছেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
তারা হলেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক -সুজন এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক স্বরাষ্ট্র ও সংস্থাপন সচিব সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের প্রধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।
সম্প্রতি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ছয়টি কমিশনের কার্যক্রম ৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে যাবে। সেদিন থেকেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু। সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতাক্রমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বসবে বলে আশা করছি। তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বলেছেন, ছয় কমিশনের পুরো প্রতিবেদন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটির সঙ্গে কথা বলবে ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কথার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে কতটুকু সংস্কার আসলে দ্রুত করতে হবে, কতটুকু পরে করা যাবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতেই জুলাই সনদ প্রণয়ন করবে সরকার। পুরো সংস্কারগুলো নিয়ে সবাই ঐকমত্যে আসবেন। ধরেন ৫ হাজার সংস্কারের মধ্যে ২ হাজারের ব্যাপারে ঐকমত্যে এলেন, এই কনসেনসাসে যেটা রিচ হবে, সবাই একমত হবে, সেটা রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করবে। স্বাক্ষর করার পর যেটা দাঁড়াবে সেটা হবে ‘জুলাই চার্টার’।