শনিবার ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২
প্রকাশিত: ২০২৫-১১-০৩ ০১:৪৯:৫৯
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ আইনের আওতায় ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে দুর্নীতি প্রমাণ হলে তা বাতিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, চুক্তি চাইলেই বাতিল করা যায় না, কারণ চুক্তির শর্তে এমন কোনো ধারা ছিল কি না তা পর্যালোচনা প্রয়োজন।
২ নভেম্বর, ২০২৫ রোববার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংক্রান্ত চুক্তি পর্যালোচনা কমিটির ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ সীমিত, কারণ অনেক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই চাকরি ছেড়েছেন।
উপদেষ্টা আরও জানান, আগের সরকারের সময় প্রণীত দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি আইনটি ‘কালাকানুন’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় ২০২৪ সালেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এই আইনের প্রয়োগ না করার জন্য। তবে আইনের আওতায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি ও চুক্তি যাচাইয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি রবিবার তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
জাতীয় কমিটির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম জানিয়েছেন, দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ আইনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বড় ধরনের দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। তিনি বলেন, “ভারতের আদানিসহ যেসব বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, সেগুলো আইনের আওতায় তদন্ত করা হবে।”
এদিকে একই দিন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চুক্তি পর্যালোচনার জন্য জাতীয় কমিটি পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়। নতুন কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য আবদুল হাসিব চৌধুরী, কেপিএমজির সাবেক সিওও আলী আশরাফ, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক মোশতাক হোসেন খান এবং সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।
কমিটি যেকোনো সূত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, নথি পরীক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শুনানিতে আহ্বান করতে পারবে। পাশাপাশি এসব চুক্তিতে সরকারের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে কি না তা নিরীক্ষা করে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সুপারিশ দেবে।
অন্যদিকে, একই দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় উঠে আসে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের প্রতি আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের দেওয়া একটি উপহার—নৌকার প্রতিকৃতি। শনিবার (১ নভেম্বর) আলজেরিয়া বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি উপহারটি দেন। বিষয়টি নিয়ে রবিবার নিজের ফেসবুক আইডিতে উপদেষ্টা পোস্ট দেন এবং জানান, উপহারটি সরকারি তোশাখানায় জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, “গত রাতে আলজেরীয় দূতাবাস থেকে পাওয়া উপহারটি সরকারি তোষাখানায় সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে। এজন্য প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও পাওয়া গেছে।”
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, কূটনৈতিক সৌজন্য রক্ষার জন্য উপহারটি গ্রহণ করেছিলেন এবং এতে কোনো রাজনৈতিক বা নির্বাচনী প্রতীকের সঙ্গে সম্পর্ক নেই।