শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

Logo
Add Image

আলোচিত খবর

টিউলিপ নিজেকে ব্রিটিশ দাবী করলেও কাগজপত্রে মিলছে বাংলাদেশি পরিচয়: দুদক

প্রকাশিত: ২০২৫-০৬-১৬ ১৯:৪৯:২৩

News Image

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও মামলার বিষয়ে নতুন করে অবস্থান স্পষ্ট করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ব্রিটিশ পরিচয়ে উপস্থাপন করলেও, প্রাপ্ত কাগজপত্র পর্যালোচনায় তাকে বাংলাদেশি নাগরিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ অবস্থায় তাকে অভিযুক্ত ও পলাতক হিসেবে গণ্য করে আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে দুদক। 

 

সোমবার (১৬ জুন) বিকেলে রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, “টিউলিপ নিজেকে যতই ব্রিটিশ বলুন না কেন, আমরা যখন কাগজপত্র দেখি তাকে বাংলাদেশি মনে হচ্ছে। কখনো ব্রিটিশ, কখনো বাংলাদেশি পরিচয় দেওয়া কি সমীচীন—তা আপনারা (সাংবাদিকরা) বিবেচনা করবেন।”

 

তিনি আরও জানান, টিউলিপের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তিনটি মামলা চলমান এবং একটি তদন্তাধীন। তার বিরুদ্ধে গুলশানে অবৈধভাবে প্লট হস্তান্তর ও ঘুষ গ্রহণ, আয়কর রিটার্নে সম্পদের তথ্য গোপন এবং রাজউকের প্লট বিতরণে অনিয়মসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে।

 

দুদক চেয়ারম্যান টিউলিপ সিদ্দিকের সদ্য পদত্যাগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “টিউলিপ যদি নির্দোষ হন, তাহলে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন কেন? তার আইনজীবী যদি দুদকে চিঠি দিয়ে থাকেন, তবে তা আবার নির্দোষ দাবি করার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় কি?”

 

তিনি জানান, দুদকের দৃষ্টিতে টিউলিপ অভিযুক্ত ও পলাতক। তার বিরুদ্ধে তলব পাঠানো হচ্ছে সুনির্দিষ্ট ঠিকানায়। আয়কর নথি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তার সোনা হঠাৎ করে ১০ ভরি থেকে ৩০ ভরিতে পৌঁছেছে—দামের কোনো তারতম্য ছাড়াই। এই অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির কারণও এখন তদন্তের আওতায় রয়েছে।

 

চেয়ারম্যান মোমেন বলেন, “আমরা তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ডিল করছি এবং আমাদের আইন অনুযায়ী তার আদালতে হাজিরা দিতে হবে—এই তথ্য তার আইনজীবীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

 

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে টানা চারবার নির্বাচিত এমপি টিউলিপ সিদ্দিক গত বছর যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে পুনর্নির্বাচিত হন। পরে জুলাই মাসে তাকে লেবার পার্টি সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী করা হয়। এর আগে তিনি সিটি মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি) পদে ছিলেন।

 

তবে গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে টিউলিপ সিদ্দিকের ভূমিকা ও সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই প্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেন। এরপর ধীরে ধীরে তার বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট গ্রহণ, অবৈধ সম্পদ ও সরকারি প্লট জালিয়াতির অভিযোগে মামলার কার্যক্রম শুরু করে দুদক।

 

দুদক প্রথমবার তাকে ১৪ মে এবং পরবর্তীতে ১৫ জুন দ্বিতীয় দফায় তলব করে। তবে টিউলিপ দাবি করেছেন, তিনি কোনো তলবি চিঠি পাননি।
 

Logo
Logo





Logo
Logo

সম্পাদক : আবু তাহের

© ২০১৪-২০২৫ টাঙ্গাইল দর্পণ, অনলাইন নিউজ পেপার ২৪/৭