শনিবার ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২
প্রকাশিত: ২০২৫-১০-২২ ০০:২০:২৮
টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এক মাস আগেই।
আজ ২১ অক্টোবর, ২০২৫ মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিহত জোবায়েদের ভাই ওই দিন সকাল ১১টার দিকে বংশাল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন মাহির রহমান (১৯), বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮) এবং ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)।
নজরুল ইসলাম বলেন, পড়াতে গিয়ে জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বর্ষার সঙ্গে আগে থেকেই মাহির রহমানের সম্পর্ক ছিল। এটি মূলত একটি ত্রিভুজ প্রেমের গল্প, যা থেকেই হত্যার পরিকল্পনা তৈরি হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মাহির ও বর্ষার মধ্যে দেড় বছরের সম্পর্ক ছিল, যদিও বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের সম্পর্কের বয়স ছিল প্রায় নয় বছর।
পুলিশের তথ্যানুসারে, বর্ষা মাহিরকে বলেন, জোবায়েদকে সরিয়ে না দিলে তিনি মাহিরের হতে পারবেন না। এই কথার পরই মাহির হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্ষা মাহিরকে জানায় যে, হত্যার দিন বিকেল চারটায় জোবায়েদ পড়াতে আসবেন। এরপর মাহির তার বন্ধু আয়লানকে নিয়ে আগেই গলিতে অপেক্ষা করে। জোবায়েদ বাসার নিচে পৌঁছালে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে মাহির জোবায়েদের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন বলেন, “ছুরি দিয়ে আঘাতের পর জোবায়েদ বাঁচার জন্য সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠেন। কয়েকটি দরজায় কড়া নাড়েন, কিন্তু কেউ খোলেননি। তৃতীয় তলায় গিয়ে বর্ষার কাছেও সাহায্য চান, কিন্তু সেও সাড়া দেয়নি।”
মাহিরের মা নিজে থানায় গিয়ে ছেলেকে হস্তান্তর করেছেন কি না, এমন প্রশ্নে এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, “এটি পুলিশের কৌশলগত পদক্ষেপ ছিল। পরিবারকে চাপ দেওয়ার পরই মাহিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের বিষয়টি সঠিক নয়।”
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের মুহাম্মদ তালেবুর রহমান, লালবাগ বিভাগের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আমিনুল কবীর তরফদার উপস্থিত ছিলেন।