শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Logo
Logo

জাতীয়

ধর্মনিরপেক্ষতার প্রস্তাবেও আপত্তি, পঞ্চদশ সংশোধনীর আগের অবস্থান চায় বিএনপি

প্রকাশিত: ২০২৫-০৪-২০ ২৩:০৬:০১

News Image

টাঙ্গাইল দর্পণ অনলাইন ডেস্ক:

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ‘এক ব্যক্তি টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না’—এমন প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছে বিএনপি। তবে দলটির মতে, বিরতি দিয়ে কেউ চাইলে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। দলটির অভিমত, জনগণ যদি কাউকে আবারও নির্বাচিত করতে চায়, তা রুদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

 

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় এ অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “টানা দুইবারের সীমা থাকলেও বিরতির পর আবারও কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে সেই সুযোগ থাকা উচিত। জনগণই শেষ কথা বলে।”

 

আলোচনায় বিএনপি আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে ভিন্নমত পোষণ করেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে—একই ব্যক্তি যেন দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন। এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট: গণতান্ত্রিক দেশে এমন বাধ্যবাধকতা অনভিপ্রেত। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “যুক্তরাজ্যসহ অনেক গণতান্ত্রিক দেশে দলীয় প্রধানই সরকার প্রধান হয়ে থাকেন। তাই এমন প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়।”

 

এছাড়া, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবেও আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে। সালাহউদ্দিন বলেন, “সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা বা বহুত্ববাদের বিষয় ছিল না। আমরা সেই অবস্থানেই ফিরতে চাই।”

 

সংলাপে ‘ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার’ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে বিএনপি। তবে তারা চায় রাষ্ট্রের বাস্তব সক্ষমতার কথা মাথায় রেখে মৌলিক অধিকার নির্ধারণ হোক। “সব কিছু মৌলিক অধিকারে আনলে রাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়বে,” বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

 

সংবিধানে নারীদের জন্য সংসদে সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়ে বিএনপি সম্মত হয়েছে। তবে তারা চায়, বর্তমান ব্যবস্থাটি পরবর্তী সংসদ পর্যন্ত বহাল থাকুক এবং ভবিষ্যৎ কাঠামো নির্ধারণে আরও আলোচনা হোক।
এনসিসি গঠনের প্রস্তাব নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মতে, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অপ্রয়োজনীয়ভাবে সীমিত হয়ে যাবে।

 

বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন—নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইসমাঈল জবিহউল্লাহ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

 

সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিছু বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, কিছু বিষয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমরা বাকশাল নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। মতভেদ থাকাটাই স্বাভাবিক। আমরা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছি।”
 





সম্পাদক : আবু তাহের

© ২০১৪-২০২৫ টাঙ্গাইল দর্পণ, অনলাইন নিউজ পেপার ২৪/৭

Logo

সম্পাদক : আবু তাহের

© ২০১৪-২০২৫ টাঙ্গাইল দর্পণ, অনলাইন নিউজ পেপার ২৪/৭