রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১
প্রকাশিত: ২০২৫-০৩-১০ ২৩:১০:৩৯
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি জবরদখল করে মানসিক ভারসাম্যহীনদের আশ্রম চালু করার ঘটনায় গ্রেফতার সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাসের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মাহবুব খান শুনানি শেষে সোমবার দুপুরে এ রিমান্ড আদেশ দেন। এর আগে রবিবার দিবাগত ১২টার দিকে মারইয়ামকে টাঙ্গাইল শহরের আকুরটাকুর হাউজিং এলাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ। মারইয়াম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। তার স্বামীর নাম শাহ আলমাস। বাবার নাম মাজাহারুল ইসলাম। তাদের বাড়ি বাসাইলে। টাঙ্গাইল আদালত পুলিশের পরিদর্শক লুৎফর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মদ বলেন, ‘মারইয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খান বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা করেন। এতে আসামি হিসেবে মারইয়াম মুকাদ্দাসের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া তার সহযোগী হিসেবে আরও অজ্ঞাতনামা আট-নয় জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুর পাড়া ছোট কালীবাড়ি সড়কে বাদী পারিবারিক পাঁচতলা ভবনের ফটকের ছয়টি তালা ভেঙে মারইয়াম অজ্ঞাতনামা আট-নয় জনকে সঙ্গে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা নগদ পাঁচ লাখ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যান। এ ছাড়া আসবাব ভাঙচুর করে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি করেন। পরিকল্পিতভাবে তারা ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিন্নমূল মানুষকে ভবনের কক্ষে প্রবেশ করিয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন।
খবর পেয়ে ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাদী রওশন আরা খান বাসায় গিয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাসকে ঘটনার বিষয় জিজ্ঞাসা করেন বলে মামলা থেকে জানা গেছে। এ সময় মারইয়াম ক্ষিপ্ত হয়ে রওশন আরাকে বলেন, এই বাড়িতে বসবাস করতে হলে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় আগামী সাত দিনের মধ্যে বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মারইয়াম মুকাদ্দাসের নেতৃত্বে গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য প্রয়াত সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম ও সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এরপর মারিয়াম আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি দখল করে বৃদ্ধাশ্রম, পাগলদের আশ্রম, পশু আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।
গত শনিবার জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ছিন্নমূল মানসিক ভারসম্যহীন মানুষদের উঠানো হয়। পরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে ১৮ জন ছিন্নমূল মানুষকে উদ্ধার করে দখল হওয়া বাড়িটি খালি করা হয়। শনিবার রাত ২টার দিকে মুচলেকা নিয়ে মারইয়ামকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল তার বিরুদ্ধে মামলা হলে গ্রেফতার করে পুলিশ।