‘বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে পারবে না’

‘বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে পারবে না’

‘বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে পারবে না’

সোমবার বিকেলে যশোর বিডিহলে যশোরের আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যশোর প্রতিনিধি

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আর কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে পারবে না।  একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের সেই বীরত্ব গাঁথা তাদের কণ্ঠেই ধারণ করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী জানুয়ারী থেকে ‘বীরদের কণ্ঠে বীরগাঁথা’ শিরোনামে সেসব কাহিনী ধারণ শুরু হবে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে যুদ্ধ করেছে, কার কোথায় যুদ্ধ করেছে এবং কোন শ্লোগানে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সেটা ধারণ করা থাকবে।

  সোমবার বিকেলে যশোর বিডিহলে যশোরের আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।   স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যশোরে মুক্তিযোদ্ধাদের মহাসমাবেশের মাধ্যমে ‘পথে পথে বিজয়’ উদযাপন শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। 

মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আগে যেমন অবজ্ঞা করা হতো, বর্তমান সরকার সেই পথ থেকে সরে এসে তাদের অনেক সম্মান দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল স্মার্ট আইডি কার্ড দেয়া হবে। কেউ যাতে এটি নকল করতে না পারে সেই কারণে বিদেশ থেকে ৮ ধরণের বারকোর্ড দিয়ে তৈরি এই স্মার্টকার্ড তৈরি করা হচ্ছে। একটি জেলা বা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শতকরা ১৫ ভাগ অসচ্চল মুক্তিযোদ্ধাদের ১৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে তাদের একটি করে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্প শেষ হবে। দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে। ইতোমধ্যে তালিকা প্রস্তুত চলছে; সরকারের পৃষ্টপোষকতায় এই গুলো সংরক্ষণ করা হবে। আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যাতে জানতে পারে সেকারণে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আর মুজিব নগরে আন্তজার্তিক মানের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। 

আওয়ামী লীগের সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ফসল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধিত্ব করে এই আওয়ামী লীগ। যার ডাকে মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাস যুদ্ধ করেছিলেন তিনি আজ নেই। কিন্তু আছে তার উত্তরসূরি উন্নয়নের মানসকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি এই যুদ্ধের বিজয়ী কারিগরদের দেখভাল করছেন। তলাবিহীন ঝুঁড়ি থেকে আজ উন্নয়নের রোল মডেলে রুপান্তিত করেছে। তাই তিনি এ সময় নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। 

যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একে এম খয়রাত হোসেন, বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স-মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) বৃহত্তর যশোর জেলার উপঅধিনায়ক রবিউল আলম, অধিনায়ক আলী হোসেন মনি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনির। 

আলোচনা শেষে যশোরের স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক নাট্যভিশয় পরিবেশনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে দুপুরে এলজিইডির অর্থায়নে যশোরে ২ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৫ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।

এলজিইডির উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, যশোর সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আনিছুজ্জামান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনীম লিংকন ও উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল হুদা।

যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আনিছুজ্জামান জানান, যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে ৩য় তলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। যার বর্গফুট ৬ হাজার ৬৫০ দশমিক ৪০। এখানে রয়েছে জাতির পিতার ম্যুারাল, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, সৌর বিদ্যুত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধি¦দের চলাচল সুবিধাসহ আধুনিক সব ব্যবস্থা কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েছে। যার নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৫ টাকা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/184029/বিরোধী-শক্তি-মুক্তিযুদ্ধের-প্রকৃত-ইতিহাসকে-বিকৃত-করতে-পারবে-না