শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ১৩শ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ১৩শ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প
দেশের প্রতি উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে এমন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার নাম পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস ডেভোলপমেন্ট প্রোগ্রাম। ৫ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৩০০ কোটি টাকারও বেশি।
আসিফ হাসান কাজলজেএসসি বা জেডিসি লেভেলে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে শিক্ষার্থী পাবেন ১০ হাজার টাকা। আর এসএসসি পরীক্ষার শিক্ষা সমাপ্তি পুরস্কার হিসেবেও থাকছে একই পুরস্কার। এদিকে এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে দেয়া হবে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার। এছাড়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষককে দেয়া হবে এক লাখ টাকা।
দেশের প্রতি উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে এমন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার নাম পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস ডেভোলপমেন্ট প্রোগ্রাম। ৫ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৩০০ কোটি টাকারও বেশি।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, শুধু শিক্ষার্থীই নয়, প্রতিবছর উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দেয়া হবে ৫ লাখ টাকার অনুদান। এছাড়াও ব্যবস্থাপনা পুরস্কার হিসেবে ইউরোপের স্কুলগুলো পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হবে ম্যানেজিং কমিটিকর সদস্যদের। ফলে নিজ বিদ্যালয় উন্নয়নের ধারণা পাবে কমিটির সদস্যরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মানসম্মত মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে পাঁচ বছর মেয়াদী সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভোলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) গ্রহণ করেছে। যা ২০১৮-১৯ অর্থ বছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর সময়সীমায় বাস্তবায়িত হবে। এই কর্মসূচির আওতায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ২০ হাজার ৩০০ সাধারণ স্কুল, ৯ হাজার ৪০০ মাদ্রাসা এবং ১১৯০ ভোকেশনাল ইউনিটসহ সাধারণ স্কুলের ৩ লাখ ৫৭ হাজার শিক্ষক ও এককোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী এ সুযোগের আওতায় আসবে।
এসইডিপি এর প্রাক্কলিত খরচ ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযোগী থেকে সহায়তা নিয়ে প্রাথমিকভাবে সরকারি উৎস থেকে অর্থায়ন করা হবে। এই স্কিমের আওতায় ৬ ধরণের অনুদান ও পুরস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি, জনসম্পৃক্তি বৃদ্ধি এবং মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি পদ্ধতি উন্নত করতেই এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ ও ধরে রাখাসহ শিক্ষার্থী শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৪ জুন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভোলপমেন্ট প্রোগ্রাম নামের স্কিমটি পাস হয়। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে এটি যাত্রা শুরু করে। প্রকল্পে একজন প্রকল্প পরিচালকসহ সাত জন কর্মকর্তা আছেন। এছাড়াও আছেন চারজন মেসেঞ্জার, দুজন গাড়ি চালক ও দুজন প্রোগ্রামারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
যেভাবে পুরস্কার পাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি: মন্ত্রণালয়ে যে ম্যানুয়ালটি পাঠানো হয়েছে এটি পাস হওয়ার পর মাঠপর্যায়ে এ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে। বিজয়ী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা পুরস্কার অর্জনের জন্য বিদ্যালয় উপস্থিতির হার, কন্টেন্ট ক্রিয়েশনসহ নানা কাজ করতে হবে। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার জন্য পূরণ করতে হবে নানা শর্ত। যা ম্যানুয়াল বই পাস হওয়ার পর বিস্তারিত জানানো হবে।
মূল্যায়নেরক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলায় সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠম করা হবে। কমিটির প্রধান থাকবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এছাড়ও থাকবেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিনিধি, কলেজ অধ্যক্ষসহ অন্যান্যরা। এছাড়া কমিটির কাজ মূল্যায়ন করবেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলেন, এখানে কোন অন্যায় বা দুর্নীতি যেন না হয়, সেকারণে ঢাকা থেকে কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হবে। এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিতে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে এ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। এরফলে শিক্ষার্থী- শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উপকৃত হবেন। প্রকল্পটি ম্যানুয়ালে পাস হয়েছে। এখন ম্যানুয়ালটি বই আকারে পাস হয়ে আসবে। আশা করছি ডিসেম্বরে এটি পাস হবে, এবং নতুন বছরের জানুয়ারি থেকে আমরা মাঠ পর্যায়ে আমরা কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।
কবে থেকে শিক্ষার্থীরা পুরস্কারের টাকা পেতে পারেন জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক চিত্তরঞ্জন দেবনাথ আরোও বলেন, এই প্রকল্পের অর্থায়নের সঙ্গে এডিবি ও বিশ্বব্যাংক জড়িত। আগে এসব প্রতিষ্ঠান অর্থদিতো আর কাজ হতো। তবে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। এসব প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে বলছে উন্নয়ন সহযোগী। ফলে জিওপি’র মাধ্যমে এই কাজ হবে। করোনা না থাকলে এত দিনে ১০ মিলিয়ন ডলারের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে যেত।
বাংলাদেশ জার্নাল/একে/এমএম
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/education/183197/শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের-জন্য-১৩শ-কোটি-টাকার-নতুন-প্রকল্প