বহু প্রতিক্ষিত যমুনা নদীর উপর দীর্ঘতম রেল সেতুর ৯৪ ভাগ কাজ শেষ, উদ্বোধন ডিসেম্বরে

বহু প্রতিক্ষিত যমুনা নদীর উপর দীর্ঘতম রেল সেতুর ৯৪ ভাগ কাজ শেষ, উদ্বোধন ডিসেম্বরে

 


টাঙ্গাইল দর্পন ডেস্ক : বহু প্রতিক্ষিত টাঙ্গাইলের প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন দীর্ঘতম রেল সেতু এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। নির্মাণাধীন এই সেতুটিতে বসানো হয়েছে সবকটি স্প্যান। বর্তমানে সেতুটির প্রায় ৯৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এরমধ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশে সেতুর পূর্ব প্রান্তের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও কাজ শেষের দিকে। এছাড়া সেতুটির পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের স্টেশন দুটি আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেল বসানো হয়েছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের ১ বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেয়া প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা প্রনয়ণসহ রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তম এ রেল সেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।

এই রেল সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪.৮০ কিলোমিটার রেলসেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে রেলপথের পাশাপাশি সেতুর সাথে গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। 

১৯৯৮ সালে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান- ‘নির্মাণাধীন রেল সেতুর কাজ ইতিমধ্যে প্রায় ৯৪ ভাগ শেষ হয়েছে এবং ৬ ভাগ অবশিষ্ট আছে। এছাড়া নির্মাণ ব্যয়ও আর বাড়ছে না। চলছে ঘষামাজা ও রঙয়ের কাজ। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই উদ্ধোধন করা যাবে। সে লক্ষ্যে রাতদিন কাজ চলছে।