ভরা মৌসুমেও নাগালের বাইরে ইলিশের দাম, অন্য মাছেও নেই স্বস্তি!

ভরা মৌসুমেও নাগালের বাইরে ইলিশের দাম, অন্য মাছেও নেই স্বস্তি!

 

এম আব্দুর রাজ্জাক,বগুড়া থেকে: বগুড়ায় মাছের বাজার এখন অনেকটাই ইলিশের দখলে। ভরা মৌসুমে বাজারে ইলিশের এমন উপস্থিতি সবার নজর কাড়ছে। তবে স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে ব্যবধান তৈরি করছে ইলিশের আকাশছোঁয়া দাম। আগ্রহ নিয়ে ইলিশের দাম জিজ্ঞেস করলেও অধিকাংশ ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন হতাশ হয়ে। তবে শুধু ইলিশ নয়, অন্যান্য মাছের দামও যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) শহরের ফতেহ্ আলী, গোদারপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, এখন ইলিশের মৌসুম হওয়ায় দাম কমেছে। নানান দামে সাইজ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, প্রতিনিয়ত মাছের দাম বেড়ে চলেছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে মাছ খাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। বাজারে ইলিশের দাম আকার ভেদে ৬৫০ থেকে ১৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা, আর ১৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। দাম বেশি হওয়ায় ছোট সাইজের ইলিশ কিনেই ফিরছেন অনেকে।

রুই মাছ ৩২০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, পাঙাশ মাছ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বড় চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া মাছ ১৮০ টাকা কেজি, নদীর বড় তেলাপিয়া ২৬০ টাকা, পোয়া মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, গুঁড়া মাছ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারভেদে মাছের দামে বেশ ব্যবধান দেখা গেছে।

বাজারে মাছ কিনতে আসা মোবারক হোসেন বলেন, ইলিশের দাম শুনে আর কেনার কথা ভাবছি না। এসব মাছ আমাদের জন্য না। এগুলো বড়লোকদের জন্য। পাঙাশ মাছ থেকে শুরু করে গুঁড়া মাছের দামও অনেক বেশি। এমন হলে কীভাবে মাছ খাবো! ইলিশ উৎপাদনে কোনো খরচ নেই। তারপরও কেন এত দামে কিনে খেতে হবে? এখানে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

ফতেহ্ আলী বাজারের মাছ বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম বলেন, মাছের দাম বাড়ে কমে। আজ মাছের দাম একটু বেশি। ইলিশের দাম শুনে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নাই। আমরাও বাড়তি দামে কিনছি। মাছ বিক্রেতা সুখরাম দাসও বলেন একই কথা। তিনি বলেন, মাছের দাম বাড়ে কমে। এখানে আমাদের কিছু করার নাই। সরবরাহ যত ভালো থাকে দাম তত কম থাকে।

বাজারের এ অবস্থায় অটো রিকশাচালক ইয়াকুব আলী বলেন, ইলিশ মাছ কিনে খাওয়া আমাদের কপালে নাই। একটা ইলিশের দাম দিয়া কয়েকজনের বাজার হয়ে যাবে। সব মাছের দামই বেশি। এমন হলে মাছ খাবো কিভাবে।

রিয়াজ উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, কয়েক বছর আগেও এই সময়ে ইলিশের দাম খুব কম থাকত। দুই বছর আগেও আধা কেজি ওজনের মাছ ৫০০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। কিন্তু এখন সেই মাছ ১৪০০ টাকা কেজি। তাহলে কেমনে খাব আমরা। পাশে দাঁড়ানো আরেক ক্রেতা বলেন, আসলে ইলিশ মাছ যেহেতু জাতীয় মাছ এবং সবার পছন্দের এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়ার দরকার। ইলিশ মাছ সাধারণ মানুষের নাগালের ভেতরে আনতে হবে।