গোপালগঞ্জে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া যাত্রাপালা

গোপালগঞ্জে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া যাত্রাপালা

গোপালগঞ্জে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া যাত্রাপালা

বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত যাত্রাপালা। একসময় শহর বা গ্রামে রাতভর মঞ্চস্থ হতো যাত্রাপালা। দূর–দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভীড় করত আসরে তাদের প্রিয় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য। আধুনিকায়নের এই যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই ঐতিহ্য। তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতি পৌঁছে দিতে দীর্ঘদিন পর হলেও গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো যাত্রাপালা উৎসব।

বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

 

বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত যাত্রাপালা। একসময় শহর বা গ্রামে রাতভর মঞ্চস্থ হতো যাত্রাপালা। দূর–দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভীড় করত আসরে তাদের প্রিয় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য। আধুনিকায়নের এই যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই ঐতিহ্য। তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতি পৌঁছে দিতে দীর্ঘদিন পর হলেও গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো যাত্রাপালা উৎসব। 

বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) রাতে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের লেকপাড়ের মুক্তমঞ্চে এ যাত্রাপালা উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খানসহ সরকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি উৎসবের আয়োজন করে। 

এ যাত্রাপালায় সদর উপজেলার সাতপাড় ইউনিয়নের অরণ্য অপেরার যাত্রা শিল্পীরা তাদের অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত কাহিনী, পাক হানাদারদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয়ে।

তবে স্যাটেলাইট ও আধুনিকতার যুগে জনপ্রিয়তা হারাতে বসেছে যাত্রাপালা। সেই সাথে করোনার কারনে কোন অনুষ্ঠান না হওয়ায় কমে যেতে থাকে যাত্রাপালার কদর। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন যাত্রা শিল্পীরা।  বাঙালির বিনোদনের অন্যতম বাহক যাত্রাপালা দেখতে মুক্তমঞ্চে ভিড় করেন নারী পুরুষসহ নানা বয়সী দর্শনার্থী।

দর্শনার্থী আকবর হোসেন, পারুল বিশ্বাস ও সাবেত আহম্মেদ বলেন, এখন কোথাও যাত্রাপালা হতে দেখি না। এখানে যাত্রাপালা হবে শুনে দেখতে এসেছি। যাত্রাপালা বাঙালির সংস্কৃতির একটি অংশ। কিন্তু আধুনিকায়নের ফলে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে আগামীতেও এমন আয়োজনের প্রত্যাশা করেন তারা।

অরণ্য অপেরার স্বত্বাধিকারী ও যাত্রাশিল্পী কল্যালী বাকচী বলেন, কালেরক্রমে এখন যাত্রাপালা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর তেমন একটা যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয় না। ফলে যাত্রাশিল্পীরা এক রকম বেকার হয়ে পড়ছেন। তবে দীর্ঘ দিন পর হলেও যাত্রাপালার অনুষ্ঠান করায় আমরা খুঁশি। আমরা চাই আগের মত দেশের সব জায়গায় যাত্রাপালার আয়োজন হোক। মেলা, অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন উৎসবে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হলে কর্মময় হয়ে উঠবে বলে মনে করেন তিনি।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, বাঙালির প্রাণের উৎসস্থলের অনুষ্ঠান হলো যাত্রাপালা। দীর্ঘদিন অবহেলার কারণে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে যাত্রাপালা হারিয়ে যাচ্ছিল। আমি মনে করি এ শিল্পটির পূন:জাগরণ দরকার। এ শিল্পের সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তারা হারিয়ে যেতে বসেছিলেন। যাত্রাপালার চর্চার মাধ্যমে তারা আবার ফিরে আসবেন। আমি প্রত্যাশা করবো সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতায় আমাদের সংস্কৃতি আমরা ধরে রাখতে পারবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমজে

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/183641/গোপালগঞ্জে-গ্রাম-বাংলার-হারিয়ে-যাওয়া-যাত্রাপালা