জবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদের বেপরোয়া আচরণ

জবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদের বেপরোয়া আচরণ

জবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদের বেপরোয়া আচরণ

জানা যায়, নাহিদ জবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলাম এর ছোট ভাই। তাই সে ভাইয়ের ক্ষমতা দেখিয়ে প্রভাব খাটিয়ে নানা ভাবে শিক্ষাথীদের হয়রানি করে থাকে...

জবি প্রতিনিধি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিয়ে বিহঙ্গ বাসের সাথে সামান্য ঝামেলা হলে কোন কারণ ছাড়াই একজন শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং একজন শিক্ষার্থীকে কোন কারণ ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের অনুমতি ব্যতীত হাতকড়া পড়িয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে এসআই নাহিদুল ইসলাম।

জানা যায়, নাহিদ জবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলাম এর ছোট ভাই। তাই সে ভাইয়ের ক্ষমতা দেখিয়ে প্রভাব খাটিয়ে নানা ভাবে শিক্ষাথীদের হয়রানি করে থাকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এসআই নাহিদ নিজেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেয় এবং এই পরিচয়ে আশ পাশের দোকান ও সদরঘাট বাস স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা তুলে। কিন্তু সে ছিল জবির মার্কেটিং বিভাগের সাবেক এমএলএসএস। এর আগেও নানা সময়ে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জবি শিক্ষাথী হয়রানি, কোন ধরনের তথ্য প্রমাণ ছাড়াই সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মারধর এবং কলার ধরে গাড়িতে তোলার অভিযোগ রয়েছে।

চাঁদা দেয়া একটি বাসের ম্যানেজার বলেন, আমাদের প্রায় সব গাড়ির কাছেই এসআই নাহিদ নিজেকে জগন্নাথের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দিয়ে টাকা নিতো। আমরাও বাধ্য হয়ে দিতাম। তার নিজেরও ৪ টি বাস এখানে আছে। এছাড়া কাল যেটি ভাঙ্গা হয়েছে সেটি তার ভাইয়ের। তারা দুই ভাই মিলে সদরঘাট বাস টার্মিনালকে চাঁদাবাজির রাজ্যে পরিণত করেছে। কিছু বললেই নানা ভাবে মামলা ও হয়রানির ভয় দেখায়।

হয়রানির শিকার সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে ক্যাম্পাসের পাশে বসে ছিলাম। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের উপর চড়াও হয় এবং আমাদের কলার ধরে পুলিশের গাড়িতে উঠায় এবং আমার এক বন্ধুকে থাপ্পর দেয়। এর কারণ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা তার ভাইয়ের বিপরীতে রাজনীতি করতাম।

বুধবার প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি বাসের গ্লাস ভাঙ্গার (ঢাকা মেট্রো ব-১১৭১৮০) সময় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে এতে ছাত্ররা দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে সবাই ক্যাম্পাসের দিকে আসে। ফাহিম দৌড়ার সময় রাস্তায় পড়ে যায়। আর তখন তাকে আটক করে। আটক করার সময় মারধর এবং বুকে পা দেয় এসআই নাহিদ। এছাড়া প্রক্টর স্যারকে না জানিয়েই ফাহিমকে হ্যান্ডক্যাপ পড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রক্টর স্যার যখন ঘটনাস্থলে আসে তখন স্যারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন তাকে না জানিয়েই আটক করেছে। সাংবাদিকদের দেখে নাহিদ রাগান্বিত হয়ে বলতেছিল ‘তোমরা এদের সবাইকে চলে যেতে বলো, নয়তো সবাইকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাবো।’ তারপর তো সবাই আবার বেশি ক্ষেপে যায় আর নাহিদের প্রত্যাহার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

সামগ্রিক বিষয় গুলো নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার আপন বড়ভাই শরিফুল ইসলাম কিন্তু আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম এমন পরিচয় দেই না। তাছাড়া আমি কোন ধরনের চাঁদাবাজি করি না। এসময় তিনি রাগন্বিত হয়ে প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে থাকেন এবং একপর্যায়ে হুমকি দেন।

পুলিশের এসআই ও জবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এক ছাত্রকে মারধর ও লাথি মেরে হাতকড়া পরিয়ে আটক করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এস আই নাহিদ হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে আমাদের ছাত্রকে নিয়ে যেতে পারেন না। তারা আমাদের ইনফর্ম করে আটক করতে পারেন। কিন্তু প্রশাসনকে না জানিয়ে আমাদের ছাত্রকে নিয়ে যেতে পারেন না। আমরা বিষয়টি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টা দেখবেন বলেছেন।

কোতয়ালী থানার ওসি মিজানুর রহমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। তিনি এ বিষয় নিয়ে আর কথা বলতে রাজি হননি।

বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী থানার এসি ডা.শারমিনের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করলেও কথা বলা সম্ভব হয় নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/education/182020/জবি-পুলিশ-ফাঁড়ির-ইনচার্জ-নাহিদের-বেপরোয়া-আচরণ