রোববারও সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট

রোববারও সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট

রোববারও সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট পালনের পরও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি না মানায় সিলেটে রোববারও চলবে পরিবহন ধর্মঘট...

বাংলাদেশ

সিলেট প্রতিনিধি

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট পালনের পরও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি না মানায় সিলেটে রোববারও (০৭ নভেম্বর) চলবে পরিবহন ধর্মঘট।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. জিয়াউল কবির পলাশ শনিবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, শুরু থেকে আমাদের দাবি একটাই। হয়তো ভাড়া বাড়বে অথবা ডিজেলের দাম কমবে। দাবি মানা না হলে ধর্মঘট চলবে। এখন পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়নি। তবে পরিবহন মালিকদের দাবির বিষয়টি নিয়ে যেহেতু রোববার ১১টার দিকে বিআরটিএ অফিসে বৈঠক রয়েছে, বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়েও নজর রাখছেন তারা। বৈঠক যদি ফলপ্রসূ হয় সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এদিকে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহণ ধর্মঘট পালনের পর দাবি না মানায় গণপরিবহনের মতো রোববার পণ্যবাহী পরিবহনও তাদের ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করবে।

সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমদ ফয়েজ শনিবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা এ ধর্মঘটে শুধু সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাইক্রো ছাড়া বন্ধ রয়েছে সব ধরণের গণপরিবহন। ট্রেন স্বাভাবিক নিয়মে চললেও আগেই শেষ হয়ে যায় ট্রেনের টিকিট।

আগের দিনের মতো শনিবার (৬ নভেম্বর) সকালের দিকে বিআরটিসির বাস চলাচল শুরু করলেও পরিবহণ শ্রমিকদের চাপের মুখে তা নিয়মিত করতে পারেনি। এমন বাস্তবতায় বড় ধরণের ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

এদিকে টানা ৪৮ ঘণ্টা পরিবহণ ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সিলেটের বিভিন্ন সড়কে বাস না পেয়ে সড়কে অসহায় অবস্থায় মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া দীর্ঘসময় বাসের অপেক্ষায় থেকে অনেকে ফিরে যান। চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা।

সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দেখা যায় শহর থেকে নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বের হওয়া যাত্রী সাধারণের ভিড়। শত শত যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন তবে কোনো বাস নেই। কোন বাস না পেয়ে যাত্রীদের পিকআপ, মোটরসাইকেল কিংবা কাউকে কাউকে হেঁটেই রওয়ানা হতে দেখা যায়। তবে তাদের ভাড়া গুনতে হয় তিনগুণ পর্যন্ত।

ছুটির দিনে ডাকা এমন ধর্মঘটের নিন্দা জানান এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন এসব যাত্রীরা।

সিলেটের গোয়ালাবাজারের একটি অফিসে চাকরি করেন ফয়ছল আহমদ। তিনি বলেন, ‘অফিস খোলা যেভাবেই হোক অফিসে যেতে হবে। সিএনজি অটোরিকশায় ৫০০ টাকা চাইছে, ভাড়া ২০০ টাকাও না। বাস ধর্মঘট এদের ঈদ নামিয়ে দিয়েছে।’

সিলেটের কদমতলীর ফল মার্কেটের বিক্রয়কর্মী আশিক মিয়া। তিনি বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়াইয়া আছি। বাস ধর্মঘট কিন্তু অফিস-মার্কেট সবই তো খোলা। মানুষের কষ্টের শেষ নাই। ঝুঁকি নিয়া কয়েকবার পিকআপে ওঠার চেষ্টা করছি, পারি নাই। বাড়িতে কেমনে যামু জানি না।’

ধর্মঘটের ব্যাপারে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. জিয়াউল কবির পলাশ বলেন, হঠাৎ করে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের পরিবহন খাতে নতুন সংকটের সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে গাড়ি ভাড়াসহ পরিবহন খরচ বাড়বে। এর প্রভাব সকল স্তরে পড়বে। তাই সরকারকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পরিহার করতে হবে।

এর আগে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ করে পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/180579/রোববারও-সিলেটে-পরিবহন-ধর্মঘট