একা নয় ফাতেমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ!

একা নয় ফাতেমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ!

একা নয় ফাতেমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ!

একজন আসামির একার পক্ষে কোনভাবেই গণধর্ষণ শেষে এমন নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার মিরপুর বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী উম্মে ফাতেমার (১৪) ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের পরিবার। তাদের দাবি, একজন আসামির একার পক্ষে কোনভাবেই গণধর্ষণ শেষে এমন নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো সম্ভব নয়।

রোববার বেলা সাড়ে ১০ টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের এম এ রাজ্জাক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ তোলা হয়।

পরিবারের অভিযোগ, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে গণধর্ষণের আলামত মিললেও পুলিশ কিছুতেই তাদের কথা আমলে নিচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের পিতা খন্দকার সাইফুল ইসলাম। এ সময় স্কুলছাত্রী নিহত ফাতেমার মা হালিমা খাতুন, দুই চাচা খন্দকার সোহল রানা ও খন্দকার মাহাফুজুর রহমান ও চাচী মোমেনা আফরোজ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১৫ জুলাই সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ভাঙা বটতলা এলাকায় একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে নবম শ্রেণীর ছাত্রী উম্মে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই পুলিশ মিরপুর পৌরসভার কুরিপোল মধ্যপাড়া এলাকার রংমিস্ত্রি মিলনের ছেলে ও আমলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আপনকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, গ্রেফতারকৃত আসামি আপন একাই ধর্ষণ শেষে স্কুলছাত্রী ফাতেমাকে হত্যা করেছে। পরে আদালতে আসামি আপন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের পর পরিবারের পক্ষ থেকে ৪-৫ জনকে আসামি করার কথা বলা হলেও পুলিশ তা না করেই মাত্র একজনকে আসামি রেখে তাদের কাছ থেকে এজাহারে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাদের পক্ষ থেকে একাধিকবার এ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড আসামি আপনের একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় বলে পুলিশের কাছে দাবি জানানা হয়।

এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে লিখিত আবেদন জানানো হলেও পুলিশ কিছুতেই তাদের কথা আমলে নিচ্ছে না। 

এদিকে গত ৯ নভেম্বর আদালতে দাখিলকৃত ফাতেমার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমাকে হত্যার আগে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। দলবদ্ধ ধর্ষণের কারণেই তার যৌনাঙ্গের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের পরই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

ময়নাতদন্ত রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমার গলায় রশি দিয়ে পেঁচানোর কারণে গলার মধ্য বরাবর গোলাকার দাগ রয়েছে। বাম চোখের নিচেও আঘাতের কারণে রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। পেটে ২টি,গলায় ৫টি ও পিছন দিকে মাজার উপর মেরুদ-বরাবর ৩টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ছুরিকাঘাতের কারণে তার শ্বাসনালী এবং রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

অপরদিকে ফাতেমার ঘাড়ের পিছন দিকে ৬টি ও ডান পায়ের পাতার উপর ৬টি মোট ১২টি স্থানে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ক্ষতও  রয়েছে। যা দেখে বোঝা যায় জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে পোড়ানো। এছাড়াও শরীরের পিছন দিকে ঘাড়ের নিচ থেকে দুইপা পর্যন্ত ফুটন্ত তরল পদার্থ ঢেলে পোড়ানো হয়েছে। এতে তার শরীরের ৩৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মামলাটি সিআইডি অথবা পিবিআই’র হাতে ন্যস্ত করার দাবি জানানো হয়।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম জানান, এটি মেডিকেল রিপোর্ট। ডিএনএ রিপোর্ট আসার পরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমজে

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/182377/একা-নয়-ফাতেমাকে-দলবদ্ধ-ধর্ষণ