রপ্তানি আয়ে অভাবনীয় উচ্ছ্বাস

রপ্তানি আয়ে অভাবনীয় উচ্ছ্বাস

রপ্তানি আয়ে অভাবনীয় উচ্ছ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে ৪৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার (৪.৭৩ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ৪০ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা।

এই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই এক মাসে এই পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়নি। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪১৭ কোটি ডলার বা ৩৫ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ১ হাজার ৫৭৫ কোটি (১৫.৭৫ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন রপ্তানিকারকরা। লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকে ভর করেই পণ্য রপ্তানিতে সুবাতাস বইছে। অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি থেকে মোট ১ হাজার ১৬২ কোটি ১১ লাখ (১২.৬২ বিলিয়ন) ডলার দেশে এসেছে; যা মোট রপ্তানির ৮০ দশমিক ১৩ শতাংশ।

এই চার মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মঙ্গলবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৪৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার আয় করেছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৩৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

২০২০ সালের অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি থেকে ২৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। আর অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে মোট ১ হাজার ৫৭৫ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি।

২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পণ্য রপ্তানি থেকে ১ হাজার ২৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। এই চার মাসে লক্ষ্য ধরা ছিল ১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার (১৩.৮৯ বিলিয়ন) ডলার।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই তিন মাসে মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে তৈরি পোশাক থেকে।

এই চার মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। অথচ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১১ দশমিক ০২ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছিল নতুন বছর। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ২৬২ কোটি ১১ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ।

এই চার মাসে নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। উভেনে বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। তবে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত মাছ, কৃষি পণ্যসহ অন্য সব খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ২২ কোটি ৩০ লাখ ডলার আয় হয়েছে। গত বছরের এই চার মাসে আয় হয়েছিল ৪৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪৫ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।

এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, জুলাই-অক্টোবর সময়ে পাট খাতের রপ্তানি আয় কমেছে ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ।  এই চার মাসে হিমায়িত মাছ রপ্তানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। কৃষিপণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৬০ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২ ৯দশমিক ০৪ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল রপ্তানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।

স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬৫ শতাংশ। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের মোট লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা আছে ৩৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/finance-business/180109/রপ্তানি-আয়ে-অভাবনীয়-উচ্ছ্বাস