বি-পাড়া আওয়ামীলীগে 'পকেটের লোক' কারা?

বি-পাড়া আওয়ামীলীগে 'পকেটের লোক' কারা?

বি-পাড়া আওয়ামীলীগে 'পকেটের লোক' কারা?

বাংলাদেশ

মোহাম্মদ শরীফ, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার বি-পাড়া উপজেলার রাজনীতির মাঠে বইছে উত্তপ্ত হাওয়া। কেবল আওয়ামীলীগের ঘরের দ্বন্দ্বে মাঠ এখন সরব। সাধারন মানুষ বলছেন, বি-পাড়ায় আওয়ামীলীগ এখন দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীর সমর্থিত, অন্যটি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহের সমর্থিত গ্রুপ। এক পক্ষ নতুন কমিটি দিলে অপর পক্ষ বিক্ষোভ নিয়ে নেমে পড়ে মাঠে। এমন দেখা গেছে, একিই ইউনিয়নে দু'পক্ষই আলাদা করে কমিটি দিচ্ছে। 

বি-পাড়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে রয়েছে দু'টি করে ছাত্রলীগের কমিটি। দু'পক্ষই নিজ নিজ গ্রুপের নেতাদের ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে। একটি পক্ষের কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জাহিদুল হাসান পলাশ। অন্যটির অনুমোদন দিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগ আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইমদাদুল হক বাপ্পী। 

একাধিক ছাত্রলীগ নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম পলাশের অনুমোদন দেওয়া ছাত্রলীগ কমিটি আবু জাহের গ্রুপ সমর্থিত। অপর দিকে সদস্য সচিব অনুমোদিত গ্রুপ জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী সমর্থিত ।

উপজেলা ছাড়িয়ে মাঠের রাজনীতির তেজ এখন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও পাড়া-মহল্লায়। সাম্প্রতি উপজেলার আট টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এড. আবদুল বারী এই নতুন কমিটির অনুমোদন দেন। 

অভিযোগ উঠে, নিজ সমর্থিতদের নিয়ে আট টি ইউনিয়নে কমিটি দিয়েছেন জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীর গ্রুপ। এই কমিটি কে 'পকেট কমিটি' বলছেন অনেকে।  'পকেট কমিটি' বিলুপ্তির দাবীতে সোমবার উপজেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহের এর গ্রুপ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বি-পাড়া উপজেলা একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, 'আমাদের উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন দুটি গ্রুপে বিভক্ত। নতুন ইউনিয়ন কমিটি গুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীর সমর্থিতরাই স্থান পেয়েছে এটা সত্যি। তবে নতুন কমিটিতে যারা স্থান পেয়েছেন তাদের মধ্যে তেমন সমালোচিত নেতা নেই। আবু জাহের এর গ্রুপে যারা রাজনীতি করেন, তারা অধিকাংশই সমালোচিত। বিভিন্ন সময় তারা বিএনপি-জামায়াতের সাথে নৌকার বিরুদ্ধেও কাজ করেছেন। 

বি-পাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহের বলেন, 'এই কমিটিকে আমরা পকেট কমিটি বলছি কারন- বিভিন্ন সময় ওনাকে (জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী) ব্যক্তিগত ভাবে যারা সহযোগিতা করেছে, তাদের নিয়েই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া বিএনপি নেতাকেও এই কমিটিতে সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে। এক বাসায় বসে কোনো সম্মেলন ছাড়া উপজেলার আট টি ইউনিয়নের কমিটি দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনা বাংলাদেশে নজিরহীন'।

বি-পাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী বলেন, 'নতুন কমিটিকে বিতর্কিত করতে একটি গ্রুপ অপপ্রচার করছে। বিএনপি-জামাতের লোক নিয়ে বিক্ষোভ করেছে তারা।ফেসবুক খুলে দেখা যায় উপজেলা চেয়ারম্যান মিটিং করছে শওকত মাহমুদের (বিএনপি নেতা) সাথে'।

দুলালপুর ইউনিয়ন নতুন কমিটি সভাপতি বিএনপি নেতা ছিলেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি এই বিষয়ে জানি না। তবে তিনি পনের-বিশ বছর যাবৎ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তাহলে তিনি বিএনপি কিভাবে?'।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু তৈয়ব অপি বলেন, 'কাগজ কলমে যে কমিটি অনুমোদন সেটাই প্রকৃত কমিটি। আমার জানা মতে কোনো ইউনিয়নে দু'টি কমিটি নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/181312/বি-পাড়া-আওয়ামীলীগে-পকেটের-লোক-কারা