ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রিফিল করে হাসপাতালে সরবরাহ

ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রিফিল করে হাসপাতালে সরবরাহ

ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রিফিল করে হাসপাতালে সরবরাহ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় সিলিন্ডারে মেডিকেল অক্সিজেনের পরিবর্তে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রিফিল করে বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের দায়ে জিলানী অক্সিজেন লিমিটেডকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় জব্দ করা হয় ৫৯টি ছোট ও ৬২টি বড় সিলিন্ডার।

বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় সিলিন্ডারে মেডিকেল অক্সিজেনের পরিবর্তে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রিফিল করে বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের দায়ে জিলানী অক্সিজেন লিমিটেডকে  ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় জব্দ করা হয় ৫৯টি ছোট ও ৬২টি বড় সিলিন্ডার।

বৃহস্পতিবার কর্ণফুলীর মইজ্জারটেকে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. মেহেদী হাসান খান।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে গেলে জিলানী অক্সিজেন নামের ওই প্রতিষ্ঠান সিলিন্ডারে মেডিকেল অক্সিজেনের পরিবর্তে ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেডের অক্সিজেন রিফিল করে নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, কর্ণফুলী, আনোয়ারা ও বাঁশখালীর বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ফার্মেসিতে সরবরাহ করে। এমনকি বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ দেয়া বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও সেখান থেকে অক্সিজেন নিতেন।

জানা যায়, বাজারে সাধারণত দুই ধরনের অক্সিজেন পাওয়া যায়। একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেডের অক্সিজেন (ঘনত্ব ৫০-৭০ শতাংশ), অন্যটি মেডিকেল গ্রেডের অক্সিজেন (ঘনত্ব ৯৯.৯৯ শতাংশ)।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুমূর্ষু রোগীদের জন্য ব্যবহৃত মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন প্রায় শতভাগ বিশুদ্ধ হতে হয়। যা শিল্প কারখানায় পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড অক্সিজেনের ক্ষেত্রে নিশ্চিত করা হয় না। 

ফলে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেনের তুলনায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড অক্সিজেনের দাম কম। তা ছাড়া এটা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকরও। কিন্তু করোনা মহামারির এই সময়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড অক্সিজেনই সিলিন্ডারে ভরে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।

জিলানী অক্সিজেন লিমিটেডের মালিক আহমেদ নিলয় বলেন, ‘সরকারি লাইসেন্স নিয়ে আমরা মূলত সিলিন্ডারে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রিফিল করে সরবরাহ করি। এ বিষয়ে আমরা খুব ভালো জানতাম না। বিভিন্ন হাসপাতাল ও ব্যক্তির অনুরোধে মানবিক দিক চিন্তা করে আমরা রিফিল করে দিতাম। এখন আর কাউকে মেডিকেলে ব্যবহার করার জন্য রিফিল করে দেব না।

কর্ণফুলীর ইউএনও শাহিনা সুলতানা বলেন, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন শিল্পকারখানায় লোহা কাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত করা হয়ে থাকে। এখন ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনকে মেডিকেল অক্সিজেন হিসেবে বাজারজাত করায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অন্যদিকে এর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মানবদেহের জন্য নিরাপদ নয়- এমন অক্সিজেন সিলিন্ডারে ভরে বিক্রির পাশাপাশি সিলিন্ডারে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির নাম ও লোগো ব্যবহার করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব অপরাধের দায়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সতর্ক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/170315/ইন্ডাস্ট্রিয়াল-অক্সিজেন-রিফিল-করে-হাসপাতালে-সরবরাহ