ঈদের করোনায় টাঙ্গাইলের বিনোদন স্পটগুলো ফাঁকা

ঈদের করোনায় টাঙ্গাইলের বিনোদন স্পটগুলো ফাঁকা

জাহিদ হাসান ॥
পবিত্র ঈদুল আযহায় রোদ-মেঘ-বৃষ্টি ও করোনার ভয় নিয়ে বরণ করে নিয়েছে টাঙ্গাইলবাসী। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে টাঙ্গাইল জেলার বিনোদন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড় দেখা গিয়েছিল বিগত বছরের ঈদগুলোতে। কিন্তু দুই বছর করোনার মহামারীর কারণে সব কিছু ফিকে হয়ে গেছে। এবার জেলার কোন বিনোদন কেন্দ্রে ভীড় লক্ষ্য করা যায়নি। প্রশাসনের নির্দেশে জেলার সকল বিনোদন স্পটগুলো বন্ধ রয়েছে। বুধবার (২১ জুলাই) সকালে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ পরতে হয় যার যার এলাকার মসজিদে। বিগত বছরে দেখা যায় ঈদের নামাজ পড়ে কোরবানি শেষে সবাই বেড় হয়ে পড়তো বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। কিন্তু এবার সেই দৃশ্য চোখে পড়েনি টাঙ্গাইল জেলায়। করোনার ভয়ে সবাই যার যার বাড়ীতেই অবস্থান করছে। ঈদ উদযাপন করছে বাড়ীতেই পরিবারের সাথে। এবার আনন্দ উদযাপন করতে এসব স্পটগুলোতে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল না।
বিনোদন স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রকৃতি উপভোগ করতে মধুপুর বনাঞ্চল, মধুপুর বিএডিসি বীজ উৎপাদন খামার, ধনবাড়ী নবাব বাড়ী, গোপালপুরে নির্মানাধীন ২০১ গম্বুজ মসজিদ, হেমনগর জমিদার বাড়ী, ভূঞাপুর যমুনা নদী র্তীরবর্তী এলাকা, বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা, যমুনা রিসোর্ট, নৌপথে গোবিন্দাসী থেকে গাবসারা চরাঞ্চল, কালিহাতীর চারান বিল, এলেঙ্গা রিসোর্ট, ঘাটাইলের ধলাপাড়া চৌধুরীবাড়ী, ঘাটাইল-ঝড়কা ও ধলাপাড়া পাহাড়ী সড়ক, ঘাটাইল শাপলা শিশু পার্ক ও সাগরদীঘি অনিক নগর পার্ক, সখীপুর বনাঞ্চল, বাসাইলের বাসুলিয়া বিল, মির্জাপুর মহেড়া জমিদার বাড়ী, দেলদুয়ার জমিদার বাড়ী, আতিয়া জামে মসজিদ, নাগরপুর জমিদার বাড়ী, উপেন্দ্র সরোবর, ধলেশ্বরী সেতু, পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী, নাগরপুর ধুবুরিয়া স্বপ্ন বিলাস চিরিয়াখানা, টাঙ্গাইলের ডিসি লেক, টাঙ্গাইলের এসপি পার্ক, ঘারিন্দা রেলস্টেশনগুলোতে দর্শনার্থীদের কোনো ভিড় দেখা যায়নি। সরকারি নিদের্শনায় জেলার অধিকাংশ বিনোদন স্পটগুলো বন্ধ। তারপরও বহু বিনোদন পিপাসু মানুষ ঈদের পরদিন বের হয়েছে ঘুরতে। এদের মধ্যে যুবকরাই বেশি রয়েছে। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরছে। ফাঁকা সড়ক, মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
ঈদের দিনে স্বপরিবারে বেড়াতে বের হয়েছেন জসিম উদ্দিন। তিনি টিনিউজকে জানান, করোনার কারণে পরিবার নিয়ে বের হওয়াই অনেক কঠিণ। কিন্তু আজ ছেলে-মেয়েদের আবদার রক্ষা করতে একটু বের হতে হয়েছে। বিগত ঈদে যে মজা ছিল, দুই বছর ধরে সে মজার ফিটেফুনাও পাচ্ছি না। আতঙ্ক নিয়ে কি আর ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে সব কিছু বন্ধ থাকায় যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে না। টাঙ্গাইলে ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থী রুনা আক্তার টিনিউজকে জানান, গাড়ী বন্ধ থাকায় দুরে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। তাই রিকশায় করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। মোটরসাইকেল নিয়ে আড্ডারত ৭-৮ জন যুবক টিনিউজকে জানান, প্রতিবার আমরা টাঙ্গাইলের প্রায় সব বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু এবার কয়েকটা যায়গায় গিয়েছিলাম। কিন্তু কোথাও কোন লোকজন চোখে পড়লো না। তাই বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি।
প্রশাসনের নির্দেশে টাঙ্গাইলে করোনা ভাইরাসের কারণে বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ঈদ উপলক্ষে যমুনা নদীর পাড়ে বহু দর্শনার্থী বেড়াতে এসেছে। তবে সামাজিক দূরত্ব মেনে কেউই ঘুরছে না। এমনকি মুখে মাস্কও পরেনি অধিকাংশ দর্শনার্থী। এতে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকেলে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। মূলত ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে ঘুরতে এসেছে দর্শনার্থীরা। বন্ধুবান্ধবদের পাশাপাশি পরিবার নিয়ে এসেছে অনেকেই। মোটামুটি ভিড় রয়েছে। কিন্তু কেউই করোনা রোধে মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। টাঙ্গাইল সদর থেকে আসা যুবক মানিক মিয়া টিনিউজকে বলেন, করোনার কারণে জেলার সব বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ। তাই বন্ধুদের সঙ্গে যমুনা নদীর পাড়ে ঘুরতে এসেছি। করোনার ঝুঁকি রয়েছে, তবুও বন্ধুদের ডাকে আসলাম। স্থানীয় শিশু সিনথিয়া টিনিউজকে জানায়, ঈদ উপলক্ষে বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে বেড়াতে এসেছে সে। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকার বেলটিয়া গ্রামের বাসিন্দারা টিনিউজকে জানান, ঈদ উপলক্ষে শত শত মানুষ সেতু এলাকায় বেড়াতে আসছে। এতে করোনা ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
তবে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা কর্তৃপক্ষ টিনিউজকে জানান, করোনার মধ্যে ঈদ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব যমুনা নদীর পাড়ে কোনো দর্শনার্থী আসা নিষেধ করা হয়েছে।

 

The post ঈদের করোনায় টাঙ্গাইলের বিনোদন স্পটগুলো ফাঁকা appeared first on টি নিউজ বিডি.



from টি নিউজ বিডি https://ift.tt/3i0bwuI