টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার স্পষ্ট সম্পর্ক আছে

টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার স্পষ্ট সম্পর্ক আছে

টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার স্পষ্ট সম্পর্ক আছে

অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সঙ্গে মস্তিষ্কে বিরল রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মধ্যে সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তবে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাব্য কারণ এখনও অজানা। মঙ্গলবার এক স্বাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় মেডিকেল অ্যাজেন্সির (ইএমএ) জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সঙ্গে মস্তিষ্কে বিরল রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মধ্যে সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তবে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাব্য কারণ এখনও অজানা। মঙ্গলবার এক স্বাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় মেডিকেল অ্যাজেন্সির (ইএমএ) জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। রয়টার্স।

ইতালীয় দৈনিক এল মেসেজারো অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন এবং মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউরোপীয় মেডিকেল অ্যাজেন্সির ভ্যাকসিন মূল্যায়ন দলের চেয়ারম্যান মারকো ক্যাভালেরি বলেন, আমার মতে— আমরা এখন বলতে পারি এটা পরিষ্কার যে, ভ্যাকসিনের সঙ্গে এটার একটি সংযোগ রয়েছে। তবে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ কী আমরা এখনো তা জানি না।

ক্যাভালেরি বলেন, ইএমএ বলবে ভ্যাকসিনের সঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সংযোগ রয়েছে। যদিও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোন বয়সীদের দেওয়া উচিত; সে বিষয়ে নিয়ন্ত্রকদের ইঙ্গিত দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে রক্ত জমাট বাঁধার বিষয়ে নিজের মন্তব্যের পক্ষে কোনো ধরনের প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার উচ্চ কোনো ঝুঁকি গবেষণায় পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বারবার বলেছে, ঝুঁকির চেয়ে ভ্যাকসিনটির উপকারিতা অনেক বেশি। ৯২ লাখ মানুষের ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ৪৪ জনের ক্ষেত্রে রক্ত জমাটের ঘটনা ঘটেছে। মস্তিষ্কে অত্যন্ত বিরল রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার এই ঘটনা সেরিব্রাল ভেনোস সাইনাস থ্রোমবোসিস (সিভিএসটি) নামে পরিচিত। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে।

গত সপ্তাহে এক পর্যালোচনায় ইউরোপীয় মেডিকেল অ্যাজেন্সি জানায়, এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের নির্দিষ্ট কোনো ঝুঁকির কারণ— যেমন বয়স, লিঙ্গ অথবা রক্ত জমাট বাঁধার আগের কোনো ইতিহাস; এই বিরল রক্ত জমাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এছাড়া ভ্যাকসিনের কারণে এই অসুস্থতার প্রমাণও নেই। তবে সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ বিষয়ে আরো বিশ্লেষণ চলছে বলে জানায় ইউরোপের এই সংস্থা।

তরুণ এবং মাঝ-বয়সী নারীদের ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার কারণেই এই ঝুঁকি— এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ইউরোপীয় মেডিকেল অ্যাজেন্সি। বুধবার রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার এই ঘটনার তদন্তের হালনাগাদ তথ্য ইএমএ প্রকাশ করতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তদন্ত চলমান থাকায় ফ্রান্স, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস-সহ আরো কিছু দেশ তরুণদের শরীরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ স্থগিত করেছে।

বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ ধরে তদন্ত করছেন, যেগুলো অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার কয়েকদিন অথবা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মস্তিষ্কে বিরল রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা করতে পারে। ইউরোপীয় তদন্তকারীরা একটি তত্ত্ব সামনে রেখে এই তদন্তের কাজ পরিচালনা করছেন; সেটি হলো অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি নেওয়ার পর কিছু বিরল ক্ষেত্রে শরীরে অস্বাভাবিক অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। এটি কেন হচ্ছে সেটি জানার চেষ্টা করছেন তারা।

অন্যরা এই ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণে রক্ত জমাট বাঁধা এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ির সম্পর্ক আছে কি না সেটি বোঝার চেষ্টা করছেন। তবে অনেক বিজ্ঞানী বলছেন, নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই এবং এটা পরিষ্কারও নয় যে, একই ভাইরাসকে টার্গেট করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মতো একই ধরনের অন্যান্য টিকা যারা নিচ্ছেন; তাদের কেন এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/নকি

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/international/155771/টিকার-সঙ্গে-রক্ত-জমাট-বাঁধার-স্পষ্ট-সম্পর্ক-আছে