এক মান্নানের হাতে অসহায় পুরো গ্রামের মানুষ

এক মান্নানের হাতে অসহায় পুরো গ্রামের মানুষ

এক মান্নানের হাতে অসহায় পুরো গ্রামের মানুষ

জেলার হরিরামপুরের চালা ইউনিয়নের হাসমিলান গ্রামের আ. মান্নান মোল্লার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় নাজেহাল গ্রামবাসী...

বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

জেলার হরিরামপুরের চালা ইউনিয়নের হাসমিলান গ্রামের আ. মান্নান মোল্লার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় নাজেহাল গ্রামবাসী। মান্নান মোল্লার মিথ্যা মামলার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আ. মান্নান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অবৈধ চাঁদা আদায়, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটতরাজ, অসহায় নারীদের উপর নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে টাকা আদায় করতো। তৎকালীন সময়ে রক্ষী বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। 

দেশ স্বাধীনের পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আ. মান্নান এলাকার অসহায় মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, অসামাজিক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অনেক মানুষের ভিটে-বাড়ি দখল করে নিঃস্ব করে দিয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, হাসমিলান গ্রামসহ আশপাশের ইউনিয়নের অসহায় মানুষদের বিভিন্ন ভাবে জুলুম-অত্যাচার করার প্রতিবাদে তৎকালীন প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসী গণপিটিশন দায়ের করেন।

তারই প্রেক্ষিতে জুডিশিয়াল তদন্ত সাপেক্ষে ডিটেনশন মামলার আসামি হিসেবে হরিরামপুর থানা পুলিশ মান্নান মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে আপোষ মীমাংসার মুচলেকায় আইনজীবীর জিম্মায় বের হয়ে বিগত ১৩. ০৯. ১৯৯১ সালে দিয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ওই সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং ১৩ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে এলাকায় কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, অত্যাচার, জুলুম করবে না মর্মে শান্তিপূর্ণ বসবাসের জন্য আপোষ-মীমাংসার চুক্তিপত্র করা হয়।

ভুক্তভোগী খুরশেদ মোল্লা জানান, মৃত একরাম উদ্দিন মোল্লার ছেলে মান্নান মোল্লা দীর্ঘদিন যাবত জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে শত্রুতা করে মিথ্যা বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে হরিরামপুর থানায় একটি মিথ্যা মামলা করে আমার পরিবারকে হয়রানি করছে।

তিনি আরো বলেন, এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে বন্দুক নিয়ে তাদের ভয়-ভীতি দেখায়। সাধারণ কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকি দেয়।

এলাকাবাসী জানান, মান্নান মোল্লা স্বাধীনতার সময় এই গ্রামের অসহায় হিন্দু-মুসলমান পরিবারের উপর জুলুম-অত্যাচার করে জায়গা দখল অন্যের জমির ফসল কেটে নিজের বাড়িতে তুলতো। মিথ্যা মামলার সাক্ষী হতে না চাইলে তার বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দেয়া হতো। তৎকালীন সময়ে এই মান্নানের মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে নিঃস্ব হয়েছে শত শত নিরীহ পরিবার। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটতরাজ চালিয়ে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছে।

বর্তমানে মান্নান মোল্লা মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সাধারণ খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের উপর নির্যাতন করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। 

এ ব্যাপারে আ. মান্নান মোল্লার সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না। এখন আমি ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে বর্তমান হরিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও যুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার হাসান ইমাম বাবু বলেন, আমি মান্নান মোল্লাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। তিনি আমার সাথে মুক্তিযুদ্ধ করেনি। তার বিরুদ্ধে ১৯৯১ সালে যে বিচার হয়েছিল আমি সেই বিচারে উপস্থিত ছিলাম।

এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটে আব্দুল মান্নান মোল্লার নাম নেই। তার আওয়ামী লীগের কোনো শাখায় পদ পদবি আছে কি না আমার জানা নেই। 

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/155540/এক-মান্নানের-হাতে-অসহায়-পুরো-গ্রামের-মানুষ