অক্সফোর্ডের টিকা ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপ

অক্সফোর্ডের টিকা ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপ

অক্সফোর্ডের টিকা ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপ

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নিরাপত্তা ইস্যুতে আরও তথ্য চাইছে ইউরোপের দেশগুলো। টিকা গ্রহীতাদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধাসহ সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের কারণে টিকা স্থগিতের জের ধরে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে ইউরোপের দেশগুলো একথা জানাল।

আন্তর্জাতিক

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নিরাপত্তা ইস্যুতে আরও তথ্য চাইছে ইউরোপের দেশগুলো। টিকা গ্রহীতাদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধাসহ সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের কারণে টিকা স্থগিতের জের ধরে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে ইউরোপের দেশগুলো একথা জানাল। বিবিসি। 

যদিও করোনার টিকা প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা। ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও ইতালি জানিয়েছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর টিকাগ্রহীতাদের শরীরে রক্ত জমাটের ঘটনায় ইইউ’র নীতিনির্ধারকদের তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষা করছে তারা। কিন্তু পোল্যান্ড ও বেলজিয়ামসহ আরও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে।

টিকা ইস্যুতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসেছিল ইউরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ)। বৃহস্পতিবার সংস্থাটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে— এই অভিযোগের পক্ষে ইএমএ এখনও সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ পায়নি জানিয়ে মঙ্গলবার সংস্থাটির প্রধান ইমার কুক এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো অভিযোগ করেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর কয়েকজন টিকাগ্রহীতার দেহে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এই অভিযোগটি আমরা তদন্ত করছি।’

‘তবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই টিকায় ঝুঁকির চাইতে উপকার অনেক বেশি। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাইনি যে, (টিকা গ্রহণের পর) যাদের রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাই দায়ী।’ 

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণের পর যে অল্প কয়েকজনের রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে, তাদের ঠিক কী কারণে এ সমস্যা হয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এদিকে মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেছেন, ইএমএ’র এই বক্তব্য উৎসাহব্যাঞ্জক।

এখন পর্যন্ত ইইউভুক্ত দেশ এবং যুক্তরাজ্যের এক কোটি ৭০ লাখ মানুষকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ৪০ জনেরও কম টিকাগ্রহীতার ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তবে কেবল যুক্তরাজ্যেই ১ কেটি ১০ লাখ মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণ করলেও সেখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা স্থগিত করা বেশিরভাগ দেশই ইউরোপের। সর্বশেষ সোমবার জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স এবং স্পেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা স্থগিতের ঘোষণা দেয়। এর আগে একই পথে হেঁটেছে আয়ারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং নেদারল্যান্ডসও। এছাড়াও আরও কিছু দেশ করোনার এই টিকা প্রদান স্থগিত করছে।

ইএমএ’র প্রতিবেদনের পরই হয়তো ইউরোপে আবারও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রয়োগ শুরু হতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়- ইউরোপের দেশগুলো কী ডব্লিউএইচও বা ইএমএ’র এই সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা রাখতে পারবে নাকি টিকা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তিই রয়ে যাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/নকি

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/international/153233/অক্সফোর্ডের-টিকা-ইস্যুতে-দ্বিধাবিভক্ত-ইউরোপ