চুরির টাকায় বউয়ের নামে এফডিআর

চুরির টাকায় বউয়ের নামে এফডিআর

চুরির টাকায় বউয়ের নামে এফডিআর

জার্নাল ডেস্ক

রাজধানীর বনানীতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি লাফ্‌জ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ৬৪ লাখ টাকা চুরি হয়। গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে ভল্ট থেকে ওই অর্থ হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বুধবার ঢাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশের ভাষ্য, গুলশান, বনানীসহ অভিজাত এলাকার বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে চুরিতে নামে তারা। এর সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো মো. রহিম, সোহেল খাঁ ওরফে কাইল্যা সোহেল ও সোহেল। এর মধ্যে প্রথমজন দলনেতা এবং পরের দু’জন সহযোগী বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে রহিমের স্ত্রী রাশিদা বেগমকে।

পুলিশ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৬৪ লাখ টাকা চুরি হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৯ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। বনানীর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চুরির পর রহিম একটি বেসরকারি ব্যাংকে তার স্ত্রী রাশিদার নামে ১০ লাখ টাকার এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট) করে।

রহিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, ঘটনার রাতে সোহেল ও কাইল্যা সোহেলকে নিয়ে মহাখালীর সাততলা বস্তির বাসা থেকে বের হয় সে। তারা তিনজন বনানী এলাকার কয়েকটি বাসা প্রথমে টার্গেট করেও ভেতরে আলো থাকায় ঢোকেনি। ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে বনানী ১৩ নম্বর সড়কের পাশের একটি গাছ বেয়ে রহিম ও সোহেল লাফ্‌জ ইন্টারন্যাশনালের জানালার পাশে যায়। এরপর গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। আরেকজন বাইরে পাহারায় থাকে। তারা প্রথমে প্রতিষ্ঠানের একটি ড্রয়ার ভাঙে। সেখানে ছয়টি ৫০০ টাকার বান্ডিলে তিন লাখ টাকা পায়। এরপর ভল্টের তালা ভেঙে সব টাকা ব্যাগের ভেতরে নেয়। এরপর টাকাভর্তি ব্যাগ নিয়ে চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় যায়। সেখানে কাইল্যা সোহেলের ছোট ভাই রাসেল ও দুলাভাই সেলিমের সঙ্গে দেখা করে। ভোর ৬টার দিকে সাততলা বস্তি এলাকার একটি মাঠে গিয়ে চুরির টাকা তারা ভাগভাটোয়ারা করে নেয়। কাইল্যা সোহেল পায় ২৮ লাখ, রহিম রাখে ২৯ লাখ, সেলিম দুই লাখ এবং সোহেল পায় ৫ লাখ টাকা।

পুলিশের ভাষ্য, চুরির কয়েকদিন পর রহিম ১২ লাখ টাকা নিয়ে শ্বশুরবাড়ি শেরপুর চলে যায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি সেখানে গাজীখামার ইসলামী ব্যাংকের শাখায় স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকা এফডিআর করে। ১৮ ফেব্রুয়ারি স্ত্রীসহ ঢাকায় ফিরে একটি মোটরসাইকেল কেনে।

ডিবির গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, চক্রটি অত্যন্ত পেশাদার। তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে। অনেকে বাসা খালি রেখে মাসের পর মাস বিদেশে থাকে। এসব খালি বাড়িও টার্গেট করে তারা। গ্রেপ্তারকৃতদের আজ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে তোলা হবে।

ডিবির এডিসি গোলাম সাকলাইন বলেন, দুটি ভাগে ভাগ করে তারা চুরির ঘটনা ঘটায়। এক দল বাইরে পাহারা দেয়, আরেক দল গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকে।

লাফ্‌জ ইন্টারন্যাশনালের হেড অব অপারেশন জাহিদুল ইসলাম রনি বলেন, সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি প্রসাধনী কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর আমরা। ব্যাংকে জমা দেওয়ার সময় পার হওয়ায় টাকা ভল্টে রাখা ছিল। এ ছাড়া ঘটনার সময় আমার বিয়ের অনুষ্ঠানও ছিল। চোর গ্রেপ্তার এবং ৩৯ লাখ টাকা উদ্ধার হওয়ায় আমরা খুশি। সূত্র: সমকাল

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/152609/চুরির-টাকায়-বউয়ের-নামে-এফডিআর