ঘরের পাশেই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, নিরাপত্তাহীনতায় বসবাসকারিরা
ঘরের পাশেই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, নিরাপত্তাহীনতায় বসবাসকারিরা
সিরাজগঞ্জ শহরের বাহিরগোলা রোড়ে অবস্থিত নেসকোর ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের পাশে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করছে কয়েকটি পরিবার।
বাংলাদেশ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিসিরাজগঞ্জ শহরের বাহিরগোলা রোড়ে অবস্থিত নেসকোর ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের পাশে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করছে কয়েকটি পরিবার।
সিরাজগঞ্জ নর্দান ইলেক্টট্রিক সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (নেসকো)’র বর্তমান বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের স্থাপিত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি কোনোরকমে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া। এতে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসংলগ্ন পশ্চিমপাশে বসবাসকারি কয়েকটি পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
বিষয়টি অবগত করে এখানে বসবাসকারি পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, সিরাজগঞ্জ নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকল জায়গায় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে চিঠি দিলেও এর কোন সুরাহা হয়নি বলে জানিয়েছে পরিবারগুলো।
ঘরের সাথে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নিয়ে বসবাসকারি পরিবারের সদস্যরা জেলার শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী বিদ্যুৎ প্লান্টের বিস্ফোরনের উদাহরণ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান- কোনো কারণে নেসকোর উপকেন্দ্রটিতে দুর্ঘটনা ঘটলে এখানে বসবাসকারি সকল সদস্যদের প্রাণহানীর আশঙ্কা রয়েছে।
তাদের দাবী- ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে নেয়া কিংবা শক্ত সীমানা প্রাচীন নির্মাণ করা, যাতে পরিবারগুলো নিরাপদে থাকতে পারে।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জ পৌরশহরের বাহিরগোলায় নেসকোর উপকেন্দ্রসংলগ্ন পশ্চিম পাশে কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ঝুঁকির মধ্যে বসবাসকারি পরিবারগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা জুফিকার হায়দার খান, জামিল হায়দার খান, নেতা ফুলাদ হায়দার খান, নূর-ই-আলম হীরা, মো. আলতাফ হোসেন ও মো. আব্দুস সোবাহান তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।
তারা জানান, তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি সহ অন্যান্যদের সম্পত্তি নিয়ে পাকিস্তান সরকারের সময়ে ৯৬ শতক জমিতে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের বাহিরগোলায় বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনের জন্য (ইপিওয়াপদা) অধিগ্রহণ করা হয়। তাদের দাবি, বাড়ির সীমানা থেকে নিরাপদ দূরত্বে ৬৬/১১ বিদ্যুত উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। তখন কোন সমস্যা হয়নি। কিন্ত স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে ৬৬/১১ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র থেকে আরো পশ্চিম দিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ এ সকল পরিবারের ঘরের কাছাকাছি ৩৩/১১কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি নির্মাণ করে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করে কাটাঁতার দিয়ে কোনোরকম পেঁচিয়ে রেখেছেন। তখন এখানে বসবাসকারিদের ঘরের সাথে প্রায় লাগোয়াভাবে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি নির্মাণ না করার জন্য তারা আপত্তি জানান। একইসাথে নিরাপত্তার দাবি জানালে, সেই সময়ে প্রকৌশলীগণ তাদের নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা বিদ্যুৎ বিভাগ করে দিবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্ত সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করাসহ নিরাপত্তার বিষয়টি কার্যকর না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে আসছে পরিবারগুলো।
বসবাসকারি আওয়ামীলীগ নেতা ফুলাদ হায়দার খান বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, শক্তিশালী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির ট্রান্সফারমারে কোন ধরণের দুর্ঘটনা ঘটলে পরিবারের সবার প্রাণহানী ঘটতে পারে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকি কখন যেন কি হয়। বিষয়টি আমারা বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকল জায়গায় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি কিন্ত এর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে নেসকোর রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী খায়রুল আমিন বলেন, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির পাশে দেয়াল থাকা উচিত তবে যদি না থেকে থাকে এবং সেখানে বসবাসকারিদের অবস্থান দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নেসকোর পাবনা বিভাগীয় তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সমস্ত সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়ে থাকে তাই বিদ্যুত উপকেন্দ্র ইচ্ছে করলেই সরিয়ে নেয়া যায় না। এটা কর্তৃপক্ষ এবং মন্ত্রনালয়ের ব্যাপার। তবে তিনি জানান, তারা আবেদন করলে দেখে সেখানে বসবাসকারিদের বিষয়টি বিবেচনা করে যতটা সম্ভব বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
সিরাজগঞ্জ নেসকোর বিক্রয় ও বিতরন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র সাহা বলেন, আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি। বিষয়টি আমি অবগত নই। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির পাশে বসবাসকারিরা আমাকে জানালে বিষয়টি আমি উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তারাই এর সিদ্ধান্ত নেবেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/আর
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/106303/ঘরের-পাশেই-বিদ্যুৎ-উপকেন্দ্র-নিরাপত্তাহীনতায়-বসবাসকারিরা